বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
মেক্সিকান স্ট্রাইকারের বিদায়ের আবহ আই লিগের শেষ ম্যাচে খেলতে যাওয়ার আগে তৈরি হয়েছিল ইস্ট বেঙ্গলে। মেক্সিকান স্ট্রাইকার সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে চেয়ে কোচের কাছে ছুটি চেয়েছিলেন। দল চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে রয়েছে, অথচ সেখানে দলের এক নম্বর বিদেশি স্ট্রাইকার ছুটি নিয়ে দেশে ফিরতে চাইছেন, এই বিষয়টি একেবারেই ভালো মনে নেননি লাল হলুদ কোচ। বরং তিনি এনরিকেকে বলতে চেয়েছিলেন, পেশাদারদের কাছে পরিস্থিতি অনুযায়ী মানবিক বিষয়টি অনেকসময় লঘু হয়ে যায়। আলেজান্দ্রোর চোখে পুরো বিষয়টি অপেশাদার মনোভাব মনে হয়েছে। যা নিয়ে কোচ ও এনরিকের মধ্যে একপ্রকার মনোমালিন্য হয়। তারই জেরে আলেজান্দ্রো সোমবার জানিয়ে দেন, ‘সুপার কাপে এনরিকেকে ছাড়াই খেলতে যাবে ইস্ট বেঙ্গল।’ মধ্যবর্তী সময়ে মেক্সিকান স্ট্রাইকারের চেয়ে ভালোমানের ফুটবলার নিয়ে আসবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
তবে কোয়েস ইস্ট বেঙ্গলের সিইও সঞ্জিত সেন এখনই কোচের কথার সুরে সুর মেলাতে নারাজ। তিনি বলেন,‘দেখুন, এনরিকের সঙ্গে আমাদের ৩১ মে পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে। মিডিয়ার কাছেই শুনছি, কোচ বলেছেন এনরিকেকে ছাড়াই দল সুপার কাপ খেলতে যাবে। এবিষয়ে আমরা আগে কোচের সঙ্গে আলোচনা করব। ছেড়ে দেওয়া হবে আর ছেড়ে দিলাম, দুটো কথার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবে হ্যাঁ, এনরিকে মঙ্গলবার বাড়ি যাচ্ছে দিন চারেকের জন্য। এরমধ্যেই কোচের বক্তব্য শুনে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’ সুপার কাপে আই লিগের নিয়মেই বিদেশি ফুটবলার খেলাতে পারবে ক্লাবগুলি। অর্থাৎ ছ’বিদেশি নথিভুক্ত হলেও প্রথম একাদশে থাকতে পারবেন পাঁচ বিদেশি। আগামী মরশুমের জন্য এবারের দলটাকেই প্রায় ধরে রাখতে চায় কোয়েস ইস্ট বেঙ্গল ম্যানেজমেন্ট।
আই লিগে রানার্স হওয়ার পরে সদস্য সমর্থকদের দারুণ অভ্যর্থনা ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে রবিবার রাতে শহরে ফিরেছেন ডিকা-চুলোভারা। রবিবার দমদম বিমানবন্দরে রানার্সদের নিয়ে সমর্থকদের এত হই-হুল্লোড় এর আগে দেখেনি কলকাতা! কারণ একটাই, শেষ পর্যন্ত খেতাবি লড়াইয়ে চেন্নাই সিটি এফসি’কে চাপে রাখা গিয়েছে। শেষ ম্যাচে গোকুলামকে হারিয়ে রানার্স হওয়ার সন্তুষ্টি ইস্ট বেঙ্গলের সংসারে। সেসময় পর্যন্ত বোঝা যায়নি দলের এক নম্বর বিদেশি স্ট্রাইকারের সঙ্গে কোচের মনোমালিন্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে! সদ্য শেষ হওয়া আই লিগে ন’টি গোল করেছেন এনরিকে। আই লিগের মাঝে চোট সারিয়ে ফিরে এসে তিনি দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান। ইস্ট বেঙ্গল আবহে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, এনরিকেকে পুরো টুর্নামেন্টে না পাওয়াই ইস্ট বেঙ্গলের আই লিগ না পাওয়ার অন্যতম কারণ।
আই লিগ চলাকালীন কোচের মনোভাব বুঝতে পেরে এনরিকেও হতাশ। সেসময় বিষয়টি সাময়িক সামলে নিলেও আই লিগ শেষ হতেই ফের কোচের কাছে ছুটির আবেদন করে এনরিকে। যাতে আলেজান্দ্রো বেশ ক্ষুব্ধ হন। আই লিগ না পাওয়ার ব্যথা ভুলতে পারছেন না স্প্যানিশ কোচ। তাঁর কথায়, ‘স্রেফ দু’তিনটি ম্যাচ জিততে পারলেই আমরা চ্যাম্পিয়ন হতাম। আমার দল এখনও পর্যন্ত আশি শতাংশ প্রত্যাশিত মানের ফুটবল খেলেছে। আগামী দিনে আমি সেটাকে একশোয় নিয়ে যেতে চাই।’
অতীত ভুলে সুপার কাপকেই ফোকাস করতে চান আলেজান্দ্রো। তিনি বলেন, ‘সুপার কাপ ভুবনেশ্বরে দারুণ গরমের মধ্যে আমাদের খেলতে হবে। তবে সব দলই এই সমস্যায় পড়বে। ফলে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া গতি নেই।’ তবে লাল-হলুদ কোচ খোশমেজাজে রয়েছেন। সোমবার সকালে হাল্কা অনুশীলন করে ফুটবলারদের তিনি ছুটি দিয়েছেন। তিনি নিজেই ফুটবলারদের সঙ্গে ওয়ান টাচ খেলেন। একইসঙ্গে ফুটবলার বিদ্যাসাগর সিংয়ের জন্মদিনে কেক কাটার উৎসবে আলেজান্দ্রো সামিল হয়েছেন। সব মিলিয়ে ইস্ট বেঙ্গলে বেশ ‘ফিল গুড’ পরিবেশ।