বিদ্যার জন্য স্থান পরিবর্তন হতে পারে। গবেষণামূলক কাজে সাফল্য আসবে। কর্মপ্রার্থীরা কোনও শুভ সংবাদ পেতে ... বিশদ
হ্যামিলটন, ১০ ফেব্রুয়ারি: নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবার টি-২০ সিরিজ জেতার সুযোগ অল্পের জন্য হাতছাড়া করল ভারত। রবিবার সেডন পার্কে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ‘টিম ইন্ডিয়া’কে ৪ রানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতল নিউজিল্যান্ড। সেই সঙ্গে ওয়ান ডে সিরিজে হারের বদলাও নিলেন কেন উইলিয়ামসনরা।
এই মাঠেই প্রথম টি-২০ ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছিল ভারতকে। সেই ভূত আজও তাড়া করেছিল ভারতীয় দলকে। কারণ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড ৪ উইকেটে ২১২ রানের বিশাল স্কোর খাড়া করে রহিত শর্মাদের সামনে। তবে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এদিন অঙ্ক কষে ম্যাচটা জেতার চেষ্টা করেছিলেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ১৬ রান। তার আগে দীনেশ কার্তিক ও ক্রুনাল পান্ডিয়ার জুটি দারুণ জমে গিয়েছিল। দুর্ধর্ষ ব্যাটিং করছিলেন ক্রুনাল। অতীতে এরকম কঠিন ম্যাচ জেতানোর নজির রয়েছে কার্তিকের। তাই সেডন পার্কে হাজার হাজার ভারতীয় সমর্থক শেষ পর্যন্ত জয়ের আশায় বিভোর ছিলেন। কিন্তু অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে কিউয়ি পেসার টিম সাউদি বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং করে ভারতের মুখের গ্রাস কার্যত ছিনিয়ে নেন। কার্তিক প্রথম বলে নেন দু’রান। পরের বলে কোনও রান হয়নি। তৃতীয় বলে সিঙ্গলস নেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ক্রুনাল। কিন্তু কার্তিক তাঁকে ফিরিয়ে দেন। পরের বলে এক রান নেন কার্তিক। শেষ দু’বলে ১২ রান করলে ম্যাচটি টাই হতো। কিন্তু পঞ্চম বলে এক রান নেন ক্রুনাল। পরের বলটি ওয়াইড হয়। শেষ ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকান কার্তিক। ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। ভারতের স্কোর ৬ উইকেটে ২০৮ রানেই থেমে যায়।
ওপেনার শিখর ধাওয়ান (৫) শুরুতেই আউট হয়ে যান। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে রহিত শর্মা ও বিজয় শঙ্কর দ্বিতীয় উইকেটে যোগ করেন ৭৫ রান। ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরে আসে ভারত। ঠিক তখনই বিজয় ২৮ বলে ৪৩ রান করে মাঠ ছাড়েন। গত ম্যাচে ভালো ব্যাট করলেও এদিন তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আউট হয়ে যান ঋষভ পন্থ (১২ বলে ২৮ রান)। রহিত শর্মা শুরুটা ভালো করলেও মোক্ষম সময়ে তিনিও উইকেট হারান। রহিতের সংগ্রহ ৩৮ রান। শুরু থেকেই দ্রুত গতিতে রান তোলার চেষ্টা করেন হার্দিক পান্ডিয়া। বেশ ভালোই ব্যাট করছিলেন তিনি। কিন্তু বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে তাঁর ব্যাট হাত থেকে ফসকে যায়। ব্যাটে-বলে ঠিকভাবে সংযোগ না ঘটায় কেন উইলিয়ামসনের হাতে তাঁর ক্যাচ জমা পড়ে। হার্দিক ১১ বলে ২১ রান করে ডাগ-আউটে ফেরেন। ২৪ রানের ব্যবধানে ভারতের পর পর চারটি উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের উপর জাঁকিয়ে বসার চেষ্টা করেছিল নিউজিল্যান্ড। একটা সময় জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ৩০ বলে ৬৮ রান। তখনই মহেন্দ্র সিং ধোনি ২ রানে আউট হয়ে দলকে আরও চাপে ফেলে দেন। যদিও ক্রুনাল পান্ডিয়ার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে ম্যাচে ফিরে আসার মরিয়া চেষ্টা করে ভারত। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন দীনেশ কার্তিক। ২টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ক্রুনাল ১৩ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। আর দীনেশ অপরাজিত থাকেন ১৬ বলে ৩৩ রানে। কিন্তু স্নায়ুর লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত ঘরের মাঠে বাজিমাত করে কিউয়িরাই।
নিউজিল্যান্ডের বড় স্কোর খাড়া করার পিছনে বড় অবদান রয়েছে ওপেনার কলিন মুনরোর। ৪০ বলে তাঁর সংগ্রহ ৭২ রান। মুনরোর ইনিংসে রয়েছে পাঁচটি চার ও পাঁচটি ছক্কা। ওপেনিং জুটিতে মুনরো ও টিম সেইফার্ট ৮০ রান যোগ করেন। প্রথম ম্যাচেও অনবদ্য ব্যাটিং করেছিলেন সেইফার্ট। এদিনও তাঁর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সামনে বেশ অসহায় দেখিয়েছে ভারতীয় বোলারদের। কিন্তু ধোনির বিচক্ষণতায় সেইফার্ট ২৫ বলে ৪৩ রান করে স্টাম্পড হন। তিনটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান কিউয়ি ওপেনারটি। কেন উইলিয়ামসন করেন ২১ বলে ২৭ রান। কলিন ডি’গ্র্যান্ডহোম ১৬ বলে যোগ করেন ৩০ রান। ড্যারিল মিশেল ১১ বলে ১৯ ও রস টেলর ৭ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন মুনরো। সিরিজের সেরা পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়েছেন সেইফার্ট।