বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গত সোমবার খয়রাশোলের কেন্দ্রগড়িয়া পঞ্চায়েতের সদস্য রাজীব ফেসবুকে ব্লক সভাপতি কাঞ্চন অধিকারীকে উদ্দেশ করে একাধিক কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করেন বলে অভিযোগ। ব্লক সভাপতির নাম করে ও তাঁর পরিবারের মহিলা সদস্যদের টেনে একাধিক পোস্ট করেন রাজীব। ওইদিন অন্য এক পোস্টে রাজীব দলেরই নেতার নামে ‘সুদীপ্ত ঘোষ জিন্দাবাদ’ লিখেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ার সেই পোস্ট ছড়িয়ে পড়ায় দলও বিড়ম্বনায় পড়ে। মঙ্গলবার মিছিল করে রাজীবের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ব্লক সভাপতি। রাজীবকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও এর পিছনে কাদের মদত রয়েছে তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান। থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। যদিও বৃহস্পতিবার আদালতে তোলার সময় রাজীব বলেন, আমি কাঞ্চন অধিকারীর অনুগামী। দুবরাজপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রপ্রসাদ দে বলেন, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬ ধারায় পুলিস মামলা শুরু করেছে। বিচারক তিনদিন পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
খয়রাশোলের শাসকদলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। ২০১১ সালে পালাবদলের পর থেকে একাধিকবার রক্তাক্ত হয়েছে এলাকা। ২০১৩ সালের ১২আগস্ট ব্লক সভাপতি অশোক ঘোষকে প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয়। খুনের পিছনে অন্য গোষ্ঠীর নাম জড়ায়। তার পরের বছর ১৬আগস্ট ফের খুন হন পরবর্তী ব্লক সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায়। সেই খুনে নাম জড়ায় অশোক ঘোষের ভাই দীপক ঘোষের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ২০১৮সালে দীপক ঘোষ ব্লক সভাপতি থাকাকালীন খুন হন। এরপর একাধিকবার ব্লক সভাপতির বদল হয়। বর্তমান ব্লক সভাপতি কাঞ্চন ও প্রাক্তন পর্যবেক্ষক সুদীপ্ত ঘোষের গোষ্ঠীর অনুগামীদের মধ্যে ফের দ্বন্দ্ব চলছে বলে অভিযোগ। এব্যাপারে কিছুদিন আগেই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম হস্তক্ষেপ করেন। তিনি ওই এলাকার সংগঠন দেখভাল করার জন্য পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে বলেছিলেন। এছাড়া জেলা নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও দ্বন্দ্ব মেটেনি। দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যের এই ফেসবুক পোস্ট সেই দ্বন্দ্বকে ফের উসকে দিচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন।
এই গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সুদীপ্তবাবু বলেন, ওকে চিনিই না। নোংরামি করলে দল ব্যবস্থা নেবে। কাঞ্চনবাবু বলেন, রাজীব আমাদের দলের কেউ নয়। তাঁকে দল থেকে আগেই বের করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, দল শৃঙ্খলাপরায়ণ। কেউ কুরুচিকর মন্তব্য করলে রেয়াত করা হবে না। এব্যাপারে দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা বলেন, তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। ব্লক সভাপতির অভিযোগের পরই পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। অথচ আমরা নানা অভিযোগ করলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। ধৃত রাজীব পান।-নিজস্ব চিত্র