বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, পাচারের সময় সীমান্তে আটক হওয়া প্রায় ১৭৩৫টি গোরুকে কীভাবে ‘মৃত’ দেখিয়ে পুনরায় বাংলাদেশে পাচার করা হয়েছে। সিআইডি মনে করছে, এই ঘটনাটি হিমশৈলের চূড়া মাত্র। বিএসএফের হাতে ধরা পড়া গোরু এই কৌশলে হামেশাই পাচার করা হতো। এই অসাধু কারবারে শুধু যে শাসকদলের প্রভাবশালীদের হাত ছিল তাই নয়। তাদের সঙ্গে বিএসএফ-পুলিসের একশ্রেণির অফিসারদেরও অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছিল। রাজ্য সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ এই তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর গত কয়েক মাসে কয়েক দফায় বিভিন্ন লাইনম্যান ও রাখালদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য প্রমাণ জোগাড় করেছে। সিআইডির এক আধিকারিক বলেন, এই মামলায় এখনও অবধি ৪১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। বুধবার সাগরদিঘির বাসিন্দা এক লাইনম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিসের সঙ্গে যোগসাজস রেখেই সে দিনের পর দিন কিভাবে গোরু পাচারের কাজে সাহায্য করত, সে ব্যাপারে সবকিছু জানিয়েছে।
এই মামলায় সিআইডি আগেই জেনারুল শেখ নামে এক খোঁয়াড় মালিককে পাকড়াও করে। জেনারুল ছাড়াও বেশ কয়েকজন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও খাটালের মালিককে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে লাইনম্যানদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা। গোরু পাচারে অভিযুক্ত এনামুলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল এই জেনারুল। ২০২০ সালে এনামুলের গ্রেফতারের পরও এলাকায় প্রভাব ধরে রেখেছিল সে। তার প্রভাব এতটাই ছিল যে, পাচারের আগে আটক হওয়া গোরু খাতায় কলমে নিমেষেই মরে যেত। সেই মরা গোরু বাংলাদেশে পাচার করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে জেনারুল সহ অন্যান্য পাচারকারীরা।
জেনারুলের বাড়ি রঘুনাথগঞ্জ থানার জালিবাগান এলাকায়। জেনারুলের একটি খোঁয়াড় ছিল। সেই খোঁয়াড় ব্যবহার করে মরা গোরু পাচার করা হতো বলেই জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। জঙ্গিপুর মহকুমায় কর্মরত কাস্টমস এবং বিএসএফ অফিসারদের ‘ম্যানেজ’ করে বাংলাদেশে গোরু পাচারের কারবার চালাত জেনারুল। এই কাজ আরও গুছিয়ে করার জন্য বড়শিমুল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একটি খাটাল চালানোর দায়িত্ব নেয় সে। সেখানেই বিএসএফ ও কাস্টমসের হাতে ধরা পড়া গোরু রেখে দিত। কিছুদিন পর সেই গোরুগুলি মারা গিয়েছে বলে কাগজপত্র তৈরি করে বাংলাদেশে পাচার করা হতো বলেই জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। পুনরায় গোরু বিক্রির কারবারে আর কে কে জড়িত আছে, সিআইডি দ্রুত তাদের পাকড়াও করতে চাইছে।