নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ছেলে ও বউমার প্রাইমারি চাকরির জন্য ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে প্রতারিত বিজেপি নেতা। পাঁশকুড়া থানার পুরুষোত্তমপুর পঞ্চায়েতের নিত্যানন্দচক গ্রামের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিত্যানন্দচক বুথের ওই বিজেপি নেতার নাম বিশ্বনাথ বেরা। আগে সিপিএমের শাখা কমিটির সদস্য ছিলেন। পরবর্তী সময়ে দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর দাবি, ছেলে শম্ভুনাথ বেরা ও বউমা বিষ্ণুপ্রিয়া প্রধান বেরার প্রাইমারি চাকরির জন্য পাশের মহাদোল গ্রামের একজনকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। মোট ২৫ লক্ষ টাকার চুক্তি হয়েছিল। ২০১৫ সালে অগ্রিম বাবদ ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। ৫০টাকার স্ট্যাম্প পেপারে এনিয়ে চুক্তিও হয়েছিল। চাকরির নিয়োগপত্র পাওয়ার পর আরও ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, কারও চাকরি হয়নি। অগ্রিম বাবদ দেওয়া টাকাও ফেরত পাননি বিশ্বনাথবাবু। এরপরই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে ২১ মার্চ মহাদোল গ্রামের এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে এফআইআর করে তদন্ত শুরু করেছে পাঁশকুড়া থানার পুলিস। বিশ্বনাথবাবু একসময় নিত্যানন্দচক গ্রামের সিপিএমের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। গ্রামের যে কোনও সালিশি সভায় তাঁর উপস্থিতি থাকত। সিপিএম ক্ষমতা থেকে চলে যেতেই তিনি দলবদল করে বিজেপির পতাকা তুলে নেন। এখন বিজেপির বুথস্তরের নেতা। ছেলে ও বউমার চাকরির জন্য তিনি তদ্বির শুরু করেন। তারজন্য মহাদোল গ্রামের ওই ব্যক্তিকে টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করেন। চাকরি না হলেও ওই টাকাও ফেরত পাননি। এনিয়ে পুরুষোত্তমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে নির্বাচিত স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য প্রবীর বেরার কাছেও সালিশির জন্য দ্বারস্থ হয়েছিলেন। প্রবীরবাবু বলেন, টাকার লেনদেনের সময় আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এখন সালিশির মাধ্যমে টাকা ফেরতের আর্জি আমাদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। তাই আইনের দ্বারস্থ হতে বলেছিলাম। সেইমতো উনি কোর্টের দ্বারস্থ হন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে এফআইআর হয়েছে। এক্ষেত্রে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ হবে।
অভিযোগকারী বলেন, আমার ছেলে ও বউমা কিছু করে না। তাই তাদের প্রাইমারি চাকরির চেষ্টা করেছিলাম। ধারদেনা করে টাকা দিয়েছিলাম। এখন সেই ধার শোধ করতে পারছি না। টাকা ফেরত চাইতে গেলে অভিযুক্ত প্রথমে সাত লক্ষ টাকা ফেরানোর আশ্বাস দেয়। পরবর্তীতে টাকা না ফিরিয়ে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। তাই আমি আদালতের দ্বারাস্থ হই।
অভিযুক্ত ব্যক্তি বলেন, বিশ্বনাথবাবু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আইনি পথে আমি সেটা প্রমাণ করব। পাঁশকুড়া থানার আইসি আশিস মজুমদার বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।