কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
বিষ্ণুপদর বাড়ি আঁউরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের ছনবেড়িয়া গ্রামে। তার নিজের কাকার ছেলে পিন্টু গিরি আঁউরাই অঞ্চল তৃণমূলের কনভেনার। দাদা বাইক চুরি চক্রের অন্যতম সদস্য বলে জানতে পেরেই আর হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি পিণ্টু। তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিসের কাছে গ্রেপ্তারের আর্জি জানান তিনি। রবিবার হুগলির ডানকুনি থানার পুলিস বিষ্ণুপদ নিয়ে রওনা দেয়। তাকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হয়। শুক্রবার রাতে বিষ্ণুপদর ডেরা থেকে চারটি চোরাই বাইক উদ্ধার হয়। ছ’মাস আগে মারিশদা থানার পুলিসও তার ঘাঁটি থেকে ১৬টি চোরাই বাইক পেয়েছিল। অর্থাৎ, বাইক চুরির চক্রে সে সক্রিয় সদস্য বলে নিশ্চিত পুলিস।
শনিবার তখন রাত ৮টা। কাঁথি শহরের দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ীর তখন বাড়ির পথে। সেই সময় বিষ্ণুপদকে নিয়ে সোজা কাঁথি থানায় হাজির হন পিণ্টু। আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসের হাতে দাদাকে তুলে দেন তিনি। জানা গিয়েছে, পিন্টুদের পরিবারের যথেষ্ঠ সুনাম আছে। তাঁর এক জেঠু ইন্দুভূষণ গিরি আঁউরাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান। পিণ্টুর স্ত্রী বর্তমানে ছনবেড়িয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। নিজেও অঞ্চল তৃণমূলের কনভেনার। ফলে, জ্যেঠতুতো দাদার নাম বাইক চুরির চক্রে জড়ানোয় বেশ অস্বস্তিতে পড়েছিলেন পিন্টু। পুলিসের তরফেও বিষ্ণুপদকে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেয়। পিন্টুকেও সে কথা জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত দাদাকে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই তৃণমূল নেতা।
মাস তিনেকের মধ্যে ডানকুনি থানা এলাকা থেকে পাঁচটি বাইক চুরি হয়। তদন্তে নেমে পুলিস হাওড়া থেকে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে। তারা প্রত্যেকে চোরাই বাইক এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় পাচারে জড়িত বলে ডানকুনির আইসি তাপস সিংহের দাবি। ধৃত তিনজনকে জেরা করে কাঁথি থানার ছনবেড়িয়া গ্রামের নাম আসে। ওই গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণুপদ চারটি চোরাই বাইক ‘রিসিভ’ করেছে বলে জানতে পারে পুলিস। এরপরই ডানকুনি পুলিস এবং কাঁথি থানার পুলিস শুক্রবার রাতে ছনবেড়িয়া গ্রাম হানা দিয়ে চারটি চোরাই বাইক বাজেয়াপ্ত করে। সেই মুহূর্তে গাঢাকা দেয় বিষ্ণুপদ।
বিষ্ণুপদর একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে। কিন্তু সেই ব্যবসায় মন না দিয়ে চোরাই বাইক চক্রে সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠে সে। মূলত, বিভিন্ন জায়গায় বাইক চুরি হওয়ার পর বিষ্ণুপদর কাছে সাপ্লাই করা হতো। সেখানে পার্টস বদল করে বিক্রি করে দেওয়া হতো।
এদিন পিন্টু গিরি বলছিলেন, ‘আমাদের পরিবারের একটা সুনাম রয়েছে। শুক্রবার রাতের ঘটনার পর অনেকেই আমাকে কাঠগড়ায় তুলছেন। এই বদনামের হাত থেকে রেহাই পেতে আমি জ্যেঠতুতো দাদাকে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। শনিবার রাতে কাঁথি থানার পুলিসের হাতে তুলে দিয়েছি।’ ডানকুনির আইসি জানিয়েছেন, ধৃত বিষ্ণুপদকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হয়েছে। তাকে নিয়ে বাইক চুরি চক্রে মোট চারজন ধরা পড়ল।