পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপির দিল্লির নেতারা ঢাক পিটিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এবার বাস্তবায়িত হবে। ভোট ফুরিয়ে যাওয়ার পর তাঁদের মুখে আর কোনও কথা নেই। বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোটের দামামা বাজবে। তার আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করলেন চলতি সপ্তাহে। ঘাটালের মানুষ আশা করেছিলেন, মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কিছু বলবেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন তিনি। আর কয়েক মাস বাদে বর্ষা। আবারও সেই বন্যা-যন্ত্রণা। ভাবলেই খেপে উঠছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর, ডেবরা, ঘাটাল সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। কেন্দ্রীয় বাজেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটিও।
ফি বছরই বর্ষায় শিলাবতী, কংসাবতীর জল বাড়ে। বানভাসি হয় ঘাটাল, খড়গপুর ও মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্গত মানুষের ক্ষোভের হাত থেকে বাঁচার একমাত্র অস্ত্র হিসেবে রাজনীতির কারবারিরা হাতে তুলে নেন ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’। বন্যার জল নেমে গেলে সবাই নীরব। নির্বাচন এলে আবারও সরব। কিন্তু বন্যা-দুর্দশা আর ঘোচে না ঘাটালবাসীর! সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলছিলেন, ‘১৯৫০ সালে বাম সাংসদ নীলকুঞ্জ বিহারী চৌধুরী সংসদে জেলার মানুষের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেছিলেন। এরপর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটিই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রস্তাব দেয়। ১৯৫৯ সালে মানসিংহ কমিটি বন্য কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে। এর কিছুদিন পরে প্ল্যানের অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। ১৯৮২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মাস্টার প্ল্যানের শিলান্যাস করা হয়। তারপর থেকেই শুরু টানাপোড়েন।’ তাঁর অভিযোগ, ‘কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাতের কারণেই এখনও চালু হয়নি ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ। সদ্য বাজেটেও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী একটি শব্দ খরচ করেননি মাস্টার প্ল্যান নিয়ে। সেটা আমাদের অবাক করেছে। আর এর প্রতিবাদে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।’
ডেবরার বাসিন্দা শঙ্কর প্রধানও বলছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাজেটে আমরা আশা করেছিলাম ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে অন্তত কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ করবে। কিন্তু কিছুই করেনি।’ গৃহবধূ শম্পা ধাওড়ের কথায়, ‘বন্যার সময় বাড়ি ঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে থাকতে হয়। বিজেপি ভোটের সময় মাস্টার প্ল্যান নিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাজেট দেখে বোঝা যাচ্ছে, তারা বাংলার মানুষের কথা ভাবে না। এবারও আমরা বানভাসি হব, এটাই সত্যি।’ সবংয়ের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘আসলে বিজেপি মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করে। আর আমাদের দল মানুষের ভালোর জন্য কাজ করে। কেন্দ্রীয় বাজেটে মানুষকে শেষ করে দিয়েছে। দীর্ঘদিন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে লড়াই করছি। কিন্তু কেন্দ্র তাতে পাত্তাই দিচ্ছে না। সদ্য প্রকাশিত হওয়া বাজেট তা আবার একবার প্রমাণ করল।’ বিজেপি নেতা কাশীনাথ বসু বলেন, ‘সময় মতো রাজ্য সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে উপযুক্ত তথ্য ও প্ল্যান জমা দিতে পারেনি। তাই, নতুন করে অর্থ বরাদ্দ করেনি সরকার। আসলে তৃণমূলের অভ্যাস সবেতেই রাজনীতি করা। তাই কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে চেঁচামেচি করছে।’
নিজস্ব চিত্র