কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ফি বছর মুণ্ডেশ্বরী ও হরিণাখালির জলে প্লাবিত হয় তাঁতিশালগ্ৰাম পঞ্চায়েতের উদনা গ্ৰাম। প্রয়োজনের সময় বিপর্যয় মোকাবিলা টিমের সদস্যদের কখনও আসতে দেরি হলে, ত্রাণসামগ্ৰীর দরকার হলে পাশে থাকে ইনসাফ ক্লাব। ২০১৬ সালে এই ক্লাব প্রতিষ্ঠা হয়। গ্ৰামে সকল ধর্মের মানুষের বসবাস। বন্যা মোকাবিলাকে সামনে রেখে এই ক্লাব গড়ে উঠলেও সারাবছর ধরে ক্লাবের পক্ষ থেকে বস্ত্রদান, রক্তদান শিবিরের মতো সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ করা হয়। গ্ৰামের বাসিন্দাদের ছেলে ও মেয়েদের বিয়েতে দানের জিনিসপত্র, বিয়ের সাজের খরচ, কখনও আবার খাবারের খরচও ক্লাবের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। খানাকুলের প্রত্যন্ত এই গ্ৰামের আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচও বহন করে এই ক্লাব। গ্ৰামের ঈদ ও শীতলা মাতার পুজোতেও একইভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন ক্লাবের সদস্যরা।
ক্লাবের সম্পাদক শেখ সাকিম বলেন, আমাদের গ্ৰাম খানাকুলের খুবই প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। মুণ্ডেশ্বরী নদী ও হরিণাখালির মাঝে আমাদের এই গ্ৰাম। বর্ষা এলেই গ্ৰামবাসীদের কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। বন্যায় সেই সমস্যা আরও ভয়ানক আকার ধারণ করে। প্রশাসনের সহযোগিতা এসে পৌঁছতে অনেক সময় লাগে। অভিজ্ঞতায় বুঝেছি বিপর্যয়ের মোকাবিলায় প্রাথমিকভাবে গ্ৰামবাসীদেরই আগে এগিয়ে আসতে হবে। শুধুমাত্র বন্যা মোকাবিলা নয়, গ্ৰামের সবধরনের উন্নয়নের কাজে গ্ৰামবাসীদের সবার আগে হাত লাগাতে হবে। সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এই ক্লাব গড়ে তোলা হয়েছে। বিপর্যয়ের সময় শুকনো খাবার, দরকারি ওষুধ ও পানীয় জলের যাতে সমস্যা না হয় তার দেখভাল করে ক্লাবের সদস্যরা। দুর্গাপুজোর সময় যেমন গরিব মানুষদের আমরা বস্ত্রদান করি। একইভাবে ঈদের সময় আমরা অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। এছাড়াও সারাবছর ধরে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা অনুষ্ঠানের কাজে নিয়োজিত থাকে এই ক্লাব।
ক্লাবের সভাপতি হামিদুল মণ্ডল বলেন, এই গ্ৰামের বাসিন্দাদের সারাবছর নদী পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। স্কুলের ছাত্রছাত্রী, প্রসূতি মহিলা ও বয়স্ক মানুষজন সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। বন্যা হলে শুকনো খাবার, ওষুধ ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নৌকা করে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে ক্লাবের ছেলেরা। আমাদের ক্লাবের বয়স খুব বেশি নয়। কিন্তু, গ্ৰামবাসীদের প্রতি দায়িত্ব পালন আমাদের পরিণত ও দায়িত্বশীল করে তুলেছে। সামনের দিনে আমাদের লক্ষ্য ক্লাবের কর্মকাণ্ডকে আরও বৃহত্তর পরিধির মধ্যে নিয়ে যাওয়া।
ক্লাবের এক তরুণ সদস্য শেখ সাদ্দাম বলেন, ক্লাবের সামনেই আছে বিশাল মাঠ। ফুটবল, ক্রিকেট খেলা হয়। করোনা মহামারীর সময় খেলাধুলো বন্ধ ছিল। এখন আবার আমরা ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি। তবে সতর্ক আছি, বন্যা হলেই বিপর্যয় মোকাবিলায় আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।