পেশাদারি ও ব্যবসায়িক কর্মোন্নতি ও ধনাগম যোগ। শারীরিক সমস্যায় মানসিক অশান্তিভোগ। আঘাত লাগতে পারে। ... বিশদ
পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের বুলানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ঋকেশ নন্দন(পিকু) ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। সপ্তাহ তিনেক আগেই বছর সাতেকের ঋকেশের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিলে হঠাৎ ওর জ্বর আসে। জ্বরের সঙ্গে ঘনঘন বমি করতে থাকে। এরপর স্থানীয় এক ডাক্তারের কাছে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সাধারণ জ্বর ভেবে সেইমতো ওষুধ দেন ডাক্তার। কিন্তু তাতেও জ্বর না কমলে রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। রিপোর্টে অসঙ্গতি পাওয়া গেলে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বোন ম্যারো টেস্ট হয়। তাতেই ঋকেশের ক্যান্সার ধরা পড়ে। তড়িঘড়ি তাকে মুম্বইয়ের টাটা মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ঋকেশের বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। যার খরচ প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা। এত টাকা অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে জোগাড় করা সম্ভব, তা নিয়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েন পরিবারের লোকেরা। ঋকেশের বাবা রাজীব নন্দন চপ বিক্রি করেন। দিনের শেষে ওই স্বল্প আয়েই সংসার চালাতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে ঋকেশকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়েছে তার সহপাঠীরাই।
বন্ধু ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পরেই নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলতে শুরু করে রণিত, অঞ্জন, শ্রুতিরা। টিফিনের খরচ বাঁচিয়ে কখনও এক টাকা, কখনও পাঁচ টাকা করে জমিয়ে মোট ১৩৪৫টাকা তারা ঋকেশের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে। ওদের বক্তব্য, স্কুলের শিক্ষকরাই আমাদের শিখিয়েছে যে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। কুরকুরে, চকোলেট না খেয়ে যদি সেই টাকা বন্ধুর চিকিত্সার জন্য লাগে, তাহলে ওসব খাব না। আমরা চাই ও আবার সুস্থ হয়ে উঠুক। স্কুলের শিক্ষক শিবশঙ্কর বিশই বলেন, ঋকেশের অসুস্থতার খবর পাওয়ার পর ওরা নিজেদের উদ্যোগে চাঁদা তুলছে। অসহায় মানুষের পাশে যে দাঁড়ানো উচিত, এই বোধটা ওদের মধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে। একজন শিক্ষক হিসেবে এর থেকে বেশি প্রাপ্তি আর কী হতে পারে!
জানা গিয়েছে, এলাকার বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে প্রত্যেকের কাছেই আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষও কিছু টাকা তুলে দিয়েছে পরিবারের হাতে। ঋকেশকে বাঁচাতে পথে নেমেছে বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। নিজের এক মাসের মাইনের টাকা ঋকেশের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু বিশই। প্রয়োজনে আরও টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, যেভাবেই হোক, ঋকেশকে বাঁচাতেই হবে।