বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওইদিন রাতে জলঙ্গির ভাদুরিয়াপাড়া এলাকায় হানা দিয়ে ডোনিয়াকে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয়। তার কাছ থেকে বাংলাদেশে পাচারের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ও কাশির সিরাপ উদ্ধার হয়। ওই যুবতী নিয়মিত বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে পাচার করত। এদিন রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জলঙ্গি থানার পুলিস তাকে পাকড়াও করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিস জানতে পেরেছে, ধৃত যুবতী বেশ কিছুদিন ধরেই ড্রাগ ও আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারের সঙ্গে যুক্ত। মুর্শিদাবাদের সীমান্ত দিয়ে লাগাতার বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের সাপ্লাই দিত সে। এই কাজে একটি গ্যাং কাজ করত। ওই যুবতীকে জালে তুলে গ্যাংয়ের বাকিদের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিস।
জলঙ্গি থানার এক পুলিস অফিসার বলেন, একটা র্যাকেট কাজ করত বলেই জানা গিয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ধৃতের কাছ থেকে একটি সেভেন এমএম পিস্তল, একটি পাইপগান, ১৪ রাউন্ড গুলিসহ ১০৫বোতল কাশির সিরাপ উদ্ধার হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় কাশির সিরাপ পাচার বাড়ছে। নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ বাংলাদেশে চড়া দামে বিক্রি হয়। কয়েক গুণ বেড়ে যায় তার দাম। ফলে কয়েক বছর ধরেই এই সিরাপ পাচারের রমরমা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে নেশার জন্য এই সিরাপের যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাংলাদেশের সাধারণভাবে মদ পাওয়া যায় না। সেদেশের মদের উপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই কারণে নেশাগ্রস্তরা বিভিন্ন উপায় খুঁজে নেয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে সক্রিয় মুর্শিদাবাদ সীমান্তের দুষ্কৃতীরা।
সীমান্ত লাগোয়া স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জেলায় গবাদি পশু পাচারের একটি র্যাকেট কাজ করত। এখন গবাদি পশু পাচার কমে যাওয়ায় মাদক পাচারের প্রবণতা বেড়েছে। কাশির সিরাপের সঙ্গে হেরোইন ও ইয়াবা ট্যাবলেটের চাহিদা বেড়েছে বাংলাদেশে। এই কাজে ঝুঁকি আছে। তবে সহজে মোটা টাকা আয় করতে স্থানীয় যুবক-যুবতীরা এই কাজে নেমে পড়েছে। তাদের বক্তব্য, কয়েকশো বোতল কাশির সিরাপ এপার থেকে ওপারে পৌঁছে দিলেই মোটা অঙ্কের টাকা হাতে আসে।
ধৃত যুবতী এই ধরনের সমস্ত মাদক পাচার করত বলেই পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্র কোথায় পাচার করা হতো তা জানতে তদন্ত শুরু করেছেন আধিকারিকরা। ধৃতকে জিজ্ঞাসবাদ করে পুলিস জলঙ্গির বেশকিছু জায়গায় তল্লাশি করতে চাইছে। সেখান থেকে আরও আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, এই গ্যাংয়ের সদস্যরা অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাদের জালে তুলতে লাগাতার অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিস।