বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
নদীয়া জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দীপক বসু বলেন, পুরসভার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও দূষণমুক্ত রাখতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে জেলার বড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতে এধরনের প্রকল্প তৈরি করা হবে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ কমবে। অন্যদিকে অব্যবহৃত পদার্থকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা সম্ভব হবে।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, কল্যাণী ব্লকের সগুনা, নবদ্বীপ ব্লকের মায়াপুর বামুনপুকুর-১, নাকাশিপাড়া ব্লকের বেথুয়াডহরি-২, রানাঘাট-২ ব্লকের দত্তফুলিয়া, শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়া টাউনশিপ ও বেলগড়িয়া-১, তেহট্ট-১ ব্লকের চারটি এবং তেহট্ট ২ ব্লকের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। শহরাঞ্চলে এধরনের প্রকল্প থাকলেও গ্রামে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় চরম সমস্যা ছিল। অধিকাংশ জায়গাতেই স্তূপাকারে জমে থাকা আবর্জনা মাঝেমধ্যেই পুড়িয়ে ফেলা হতো। যার ফলে বিশেষ করে শীতের সময় গ্রামাঞ্চলে বায়ুদূষণ কয়েক গুণ বেড়েছে।
শান্তিপুরের বেলঘড়িয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগেই এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগ নিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু জমি জটের কারণে প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যায়। পঞ্চায়েতের প্রধান তপতী বসাক বলেন, বর্তমানের জমির সমস্যা মিটেছে। চেষ্টা করছি প্রশাসনের সহযোগিতায় দ্রুত যাতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা যায়।
জেলা পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, মোটামুটি পাঁচ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে, এমন গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে এই পর্বে বেছে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাঁচ হাজার জনসংখ্যার জন্য মাথাপিছু ৬০ টাকা করে ধরে নিয়ে প্রকল্পের ডিপিআর তৈরি করা হচ্ছে। অর্থাৎ যদি কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঁচ হাজার জনসংখ্যা থাকে, সেক্ষেত্রে প্রকল্পের জন্য তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে। এরমধ্যে ৩০ শতাংশ টাকা জেলা পরিষদের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের থেকে ব্যয় হবে। পাশাপাশি প্রকল্পের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে একটি করে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা সিপিইউ তৈরি করতে হবে।
এই কাজে এমজিএনআরইজিএ প্রকল্পকে যুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়ে পচনশীল ও অপচনশীল দ্রব্য সংগ্রহের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতকে ব্যাটারিচালিত গাড়ি দেওয়া হবে। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে ওই গাড়ির খরচ বহন করা হবে। এইভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। মোটামুটি একএকটি প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে।
এছাড়া বর্তমানে জেলায় ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু রয়েছে। ওই প্রকল্পগুলির উন্নতিতেও অর্থ বরাদ্দ করতে চায় জেলা পরিষদ। অন্যদিকে করিমপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অভয়পুর গ্রামে বছর কয়েক আগে ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প চালু হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন চলার পরই প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নতুন করে ওই প্রকল্পটি চালুর দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলেন, ক্রমশ গ্রামের জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু আবর্জনা, নোংরা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনও জায়গা নেই। ফলে এলাকায় দূষণের মাত্রাও বাড়ছে। আমরা চাই পুনরায় প্রকল্পটি চালু করা হোক।