বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে একটি বিস্ফোরক বোঝাই পিকআপ ভ্যান মাঝখণ্ড গ্রামের কাছে জাতীয় সড়কের পাশে একটি ধাবার সামনে দাঁড়িয়ে আছে বলে খবর আসে। সেইমতো রামপুরহাট পুলিসের একটি টিম সেখানে অভিযান চালায়। পুলিস দেখেই ধাবা থেকে গা-ঢাকা দেয় ওই পিকআপ ভ্যানের চালক ও পাচারকারীরা। ভ্যানটিতে তল্লাশি চালিয়ে কাঠের পাটাতনের নীচ থেকে বিস্ফোরকগুলি উদ্ধার হয়। পুলিস জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের মধ্যে ২৬০০টি ডিটোনেটর ও ৫৫০০টি জিলেটিন স্টিক রয়েছে। গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও বিস্ফোরক বহনের কোনও বৈধ নথিপত্র মেলেনি। পুলিস আটক ভ্যানের নম্বর ধরে তল্লাশি চালিয়ে জানতে পারে, গাড়িটির মালিকের বাড়ি নলহাটিতে। যদিও এখনও পর্যন্ত তার কোনও হদিশ মেলেনি বলে পুলিস জানায়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া হস্তিকাঁদা গ্রামের কাছে একইভাবে একটি পিকআপ ভ্যান ও চারচাকা গাড়ি আটক করে ৩৪০০টি জিলেটিন স্টিক উদ্ধার করেছিল রামপুরহাট পুলিস। গ্রেপ্তার হয়েছিল পাঁচ আন্তঃরাজ্য পাচারকারী। ২০১৯ সালেও স্বাধীনতা দিবসের আগে ঝাড়খণ্ড সীমানায় নাকা চেকিং চলাকালীন একটি ট্রাক্টর থেকে ২৫০০টি জিলেটিন স্টিক উদ্ধার করে মুরারই পুলিস। গত বছরের ৫ এপ্রিল নলহাটির বাহাদুরপুর যাওয়ার রাস্তায় বিস্ফোরক বোঝাই লরি আটক করে উদ্ধার হয়েছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজারটি ডিটোনেটর। ওই বছরের ১০ জুলাই রদিপুর গ্রামের কাছে ১১৯ কুইন্টাল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও প্রায় এক লক্ষ অবৈধ ডিটোনেটর উদ্ধার হয়। একইভাবে গত বছরের ৬ আগস্ট মহম্মদবাজার পুলিস চার বস্তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ৯৫০টি করে ডিটোনেটর, জিলেটিন স্টিক উদ্ধার হয়। এছাড়া, রোজই জেলার কোথাও না কোথাও মজুত বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করছে পুলিস।
উল্লেখ্য, রামপুরহাট, মহম্মদবাজারের পাঁচামি, নলহাটি, মুরারইয়ের রাজগ্রাম সহ জেলার পাথর শিল্পাঞ্চলজুড়ে অবৈধভাবে বিস্ফোরকের কারবার গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। সেখান থেকে সহজেই বোমা তৈরির নানা উপকরণ চলে আসে দুষ্কৃতীদের হাতে। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, জিলেটিন স্টিক ও ডিটোনেটর দিয়ে পাথর খাদানে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এদিন বিস্ফোরক উদ্ধারের পর পুলিস সুপার বলেন, সম্ভবত কোনও পাথর খাদানে বিস্ফোরকগুলি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। যদিও ২০১৭ সাল থেকেই জেলায় ২১৭টি খাদানের মধ্যে ২১১টি পরিবেশ আদালতের নির্দেশে বন্ধের নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু তার অধিকাংশই নোটিস উপেক্ষা করে চলছে বলে অভিযোগ। ওই অবৈধ খাদানে কোনও বৈধ বিস্ফোরক ব্যবসায়ী বিস্ফোরক সরবরাহ না করার জেরে গজিয়ে উঠেছে বিস্ফোরকের পাচারচক্র। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক পাথর খাদানে না কি নাশকতার কাজে ব্যবহারের জন্য পাচার হচ্ছিল তা অবশ্য খতিয়ে দেখছে পুলিস। তবে অনেকেই বলছেন, পুলিস মাঝেমধ্যেই বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মূল কারবারিরা অধরাই থেকে যায়।