রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
রামপুরহাট মেডিক্যালে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী ভর্তি হন। এমনকী মাঝেমধ্যে শয্যা না পেয়ে মেঝেতেও থাকতে হয় রোগীদের। যাঁদের অধিকাংশ পরিজন হাসপাতাল চত্বরেই রাত্রিবাস করেন। কিন্তু রোগীর আত্মীয়দের রাতে থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানো অথবা গাছতলায় বসে রাত কাটাতে হয় তাঁদের। হাসপাতালের কাছাকাছি রাতে থাকার কোনও বাড়ি বা লজও নেই। ভুক্তভোগীরা তাই রাতে থাকার জন্য ‘নাইট শেল্টার’ তৈরির দাবি করেছেন।
জানা গিয়েছে, বাম আমলে সাংসদ রামচন্দ্র ডোমের অর্থানুকূল্যে রোগীর আত্মীয়দের রাত্রিবাসের জন্য দ্বিতল ভবনটি গড়ে তোলা হয়। পরে সেই ভবনে পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র খোলা হয়। এরপর পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্র নিজের ভবনে স্থানান্তরিত হলেও বর্তমানে ভবনটি তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এক রোগীর আত্মীয় ত্রিলোচন মাল বলেন, হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে স্ত্রী ভর্তি রয়েছে। দু’রাত ধরে হাসপাতালেই রয়েছি। কোনও ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালের বাইরে খোলা বারান্দায় শুয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে। কখনও আচমকা ঘুম ভেঙে দেখছি, আমার গা ঘেঁষে একটা কুকুর শুয়ে রয়েছে। আর এক রোগীর আত্মীয় দিবাকর মণ্ডল বলেন, রাতের দিকে হাসপাতাল চত্বরে তেমন কোনও নিরাপত্তা থাকে না। ফলে যত্রতত্র ঘুমোতেও ভয় লাগে। যদি সবকিছু চুরি হয়ে যায়! ময়ূরেশ্বরের বাসিন্দা লক্ষ্মী বাগদি বলেন, তিনদিন ধরে কার্যত হাসপাতালেই পড়ে রয়েছি। মেয়ের অবস্থা সঙ্কটজনক। এখানে রোগীর আত্মীয়দের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা নেই। আবার হাসপাতালের ভেতরে ঢোকারও উপায় নেই। ফলে গাছতলায় মশার কামড় খেয়ে খুব কষ্ট করে থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, রোগীর আত্মীয়দের বসে থাকার জন্য একটি প্রতীক্ষালয় আছে বটে, কিন্তু চারিদিক খোলা। প্রতীক্ষালয়ের মেঝেতে যাঁরা জায়গা পান না, তাঁদের কাউকে রোগীদের যাতায়াতের রাস্তার ধারে পলিথিন পেতে শুয়ে থাকতে হয়। কখনও কুকুরের পাশে শুয়ে কাটাতে হয় তাঁদের। এক চিকিৎসকের কথায়, এভাবে রাস্তার কুকুরের পাশে শুয়ে থাকলে মানুষের নানা ধরনের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। হাসপাতালের এক নিরাপত্তা রক্ষীর কথায়, প্রতি রাতে এভাবেই যত্রতত্র দুশোর বেশি রোগীর আত্মীয় থাকেন, মহিলারাও থাকেন। বৃষ্টি হলে হাসপাতালের বিল্ডিংয়ের কার্নিসের নীচে দাঁড়াতে হয় তাঁদের। দেখে কষ্ট হয়। কিন্তু উপায় থাকে না। হাসপাতালের ভিতরে তাঁদের ঢুকতে দিলে আমার চাকরি চলে যাবে। এমএসভিপি বলেন, প্রচুর মানুষ যত্রতত্র শুয়ে রাত কাটান। এতে শৃঙ্খলার অসুবিধে হয়। চলাচলের রাস্তাতেও অনেকে শুয়ে থাকেন। কিন্তু মানুষগুলো যাবেন কোথায়? আমরা তাই কিছু বলিও না। তবে বুঝেছি নাইট শেল্টার খুবই প্রয়োজন।