পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, জেলায় সাড়ে সাত লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভগবানপুর-১ব্লকে ১৬৮টি মৌজায় ক্ষতিগ্রস্তর সংখ্যা সর্বাধিক, ২লক্ষ ৯৫২০। ভগবানপুর-২ব্লকে ১১৭টি মৌজায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৭১হাজার ২৩৪জন। পটাশপুর-১ব্লকে ক্ষতিগ্রস্ত মৌজার সংখ্যা ১৪০। তাতে মোট ৯৪হাজার ৮২১জন ক্ষতির কবলে পড়েছেন। পটাশপুর-২ব্লকে ১৩০টি মৌজায় ক্ষতিগ্রস্তর সংখ্যা ১লক্ষ ৯ হাজার ৩০০। এগরা-১ ও ২ ব্লকে যথাক্রমে ২২হাজার ও ৪৫হাজার ৪৬১জন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এছাড়াও পাঁশকুড়া, ময়না, শহিদ মাতঙ্গিনী, কোলাঘাট সহ জেলার ২৫টি ব্লক থেকেই কমবেশি মানুষজন বন্যা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতিতে রাস্তাঘাট, নদীবাঁধ, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সাবস্টেশন ও অন্যান্য সরঞ্জাম, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও মৎস্য পরিকাঠামোতেও যথেচ্ছ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রত্যেকটি দপ্তরকে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১৬সেপ্টেম্বর রাতে পটাশপুর-১ব্লকের আমগেছিয়া সংলগ্ন তালছিটকিনি মৌজায় কেলেঘাই নদীবাঁধ ভেঙেছিল। এখনও সেই ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকছে। ভগবানপুর-১ ব্লকের গড়বাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতটি মৌজা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। জুখিয়া ও বরোজ গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু এলাকাও কেলেঘাই নদীর জলে প্লাবিত। ২০০৮সালেও গড়বাড়ি-১, জুখিয়া কিংবা বরোজ পঞ্চায়েতের ওইসব এলাকা জলমগ্ন হয়নি বলে ভগবানপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাজল বর্মন জানান।সেচদপ্তরকে জরুরিভিত্তিতে ভেঙে যাওয়া নদীবাঁধ সারানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সেই কাজে গতি আনতে পারছে না সেচ ও জলপথ দপ্তর। বিশেষ করে কেলেঘাই নদীর উপর বিভিন্ন জায়গায় কাঠের সেতু থাকায় সরঞ্জাম ভর্তি নৌকা তালছিটকিনি গ্রামে কেলেঘাইয়ের নদীবাঁধে নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ানো নদীর উপর সবকটি কাঠের সেতু ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। কোনওরকম আইনশৃঙ্খলার প্রশ্ন জড়িয়ে থাকলে প্রশাসন তার দায় নেবে বলেও সেচদপ্তরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ২৮সেপ্টেম্বর জেলাশাসক ফের ওই এলাকায় ভিজিটে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
কেলেঘাই নদীর জল অবিরাম ঢুকতে থাকায় ভগবানপুর ও পটাশপুরে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়নি। প্রতিদিন নতুন কিছু মৌজা প্লাবনের মুখে পড়ছে। চণ্ডীপুর ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হয়েছে। টানা ১০দিন বিদ্যুৎহীন প্লাবিত এলাকা। এনিয়ে দুর্গতদের মধ্যে ক্ষোভের পারদ চড়ছে। এমনিতেই ধান ও পান চাষ একেবারে শেষ। তার উপর হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন। বাড়ি ছেড়ে কেউ স্কুলঘরে, কেউ উঁচু জায়গায় রাস্তার উপর ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছেন। এই অবস্থায় প্রত্যেকেই বাড়ি ফিরতে চান। কিন্তু, কেলেঘাই নদীর ভাঙা বাঁধ এক্ষেত্রে মূল অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।