বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শিল্পাঞ্চলের অন্ধ দুঃস্থ পড়ুয়াদের স্কুলে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে আসানসোল ব্রেইল অ্যাকাডেমি। শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডেরও কিছু শিশু এখানে শিক্ষার আলো নিচ্ছেন চোখের আলোর অভাব ঘোচাতে। ঝাড়খণ্ডের নলার বাসিন্দা দীনবন্ধু খুব অল্প বয়সেরই বাবাকে হারিয়েছে। মা পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁকে দেখার লোক ছিল না। তার উপর দীপবন্ধু চোখে দেখতে পায় না। এই অবস্থায় বিড়ম্বনায় পড়েন তার মা। এরপর তাঁকে আসানসোলের অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করানো হয়। প্রায় তিনবছর এখানে রয়েছে সে। এখন সে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি তার কাছে নতুন দীগন্ত খুলেছে দাবা। তিনবছর ধরেই এই প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের দাবার প্রশিক্ষণ দিতে আসছেন নিমাই দাস। তাঁর নিজেরও দৃষ্টিশক্তি নেই। দাবার ক্লাস মনে ধরে দীনবন্ধুর। প্রাথমিক সাফল্য পেয়েছে সে। এবার একেই আঁকড়ে ধরতে চায়। বার্নপুরের সূর্যনগরের কিমি মুর্মুরও বাবা মারা গিয়েছেন। পঞ্চম শ্রেণির এই আদিবাসী খুদেও দাবায় পারদর্শী হয়ে উঠেছে। সেও দীনবন্ধুর মতোই দাবাকে কেরিয়ার বানাতে চায়। একই রাস্তায় যাচ্ছে রানিগঞ্জের বিকাশ কুমার সিনহাও। বিভিন্ন বড় প্রতিযোগিতায় সুস্থ ছেলেমেয়েদের সঙ্গেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নিজেদের তৈরি করছে। ঝাড়খণ্ডের নলার বাসিন্দা লক্ষ্মীপদর রাজমিস্ত্রি বাবার মুখে হাসি ফুটেছিল যখন সে শুনেছিল মা মরা ছেলে লক্ষ্মীই দাবার রাজ্য প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছে। আসানসোলর এই চার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন পড়ুয়া অংশ নিয়েছিল পশ্চিম বর্ধমান দাবা সংস্থার প্রতিযোগিতায়। সেখানেই এসেছিলেন বাংলার প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া। তিনিও তাঁদের প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসে এখানে অ্যাকাডেমি খোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। দীনবন্ধু, লক্ষ্মীপদরা বলেন, পড়াশোনার থেকে অবসর পেলেই দাবা খেলি। আমরা চারজনই নয় এখানে সাতজন পড়ুয়া দাবা খেলতে বিশেষ আগ্রহী। দাবা খেলেই দেশের নাম উজ্জ্বল করতে চাই।দিব্যেন্দুবাবু বলেন, দাবা খেলার এক সামাজিক প্রভাব রয়েছে। তা যেমন মস্তিকের বিকাশ ঘটনায় তেমনি অন্য পথে যাওয়া থেকেও মনকে নিয়ন্ত্রণ করে। ওদের এই আগ্রহ আমার ভালো লেগেছে। শিশু থেকে কৈশর এখন একাকিত্বে ভুগছে তা কাটাতে পারে দাবা। মলয়বাবু বলেন, আসানসোলের থেকে ভালো দাবাড়ু বেরিয়ে এসে বাংলার নাম উজ্জ্বল করুক তা চাই। আমি দিব্যেন্দুবাবুকে বলেছি, তিনি এখানে অ্যাকাডেমি করুন আমরা পাশে থাকব।