বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এ ব্যাপারে পুরসভার প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বর্ধমান শহরে সবুজ ফিরিয়ে আনাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা শহরবাসীকে সুন্দর পরিবেশ উপহার দিতে চাই। শহরের অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের কারণে যদি শহরের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে বলে শহরবাসী মনে করেন তাহলে অবশ্যই বিষয়টি পুরসভা খতিয়ে দেখবে।
বর্ধমান শহরের বিভিন্ন মোড়ে টাঙানো রয়েছে ছোট বড় হোর্ডিং। যার দাপটে শহর কার্যত মুড়ে গিয়েছে। হোর্ডিংয়ে ঢাকা বর্ধমান শহর দিনদিন অচেনা হয়ে উঠছে নাগরিকদের। পরিকল্পনাহীনভাবে সাইনবোর্ড টাঙানোয় শহরের সৌন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ শহরবাসীর। কার্জন গেট, বিসি রোডের দু’ধারে, জিটি রোড, মেহেদিবাগান, রেল স্টেশন চত্বর সর্বত্রই একই ছবি। প্রশাসনের নিজস্ব হোর্ডিং, বিভিন্ন সংস্থার ছোট, বড় ব্যানারে ছেয়ে গিয়েছে বর্ধমান শহর। কোথাও একটি ব্যানারের উপর পড়ছে নতুন ব্যানার। বড় বড় সাইনবোর্ডের পিছনে ঢাকা পড়েছে শহরের বহু পুরনো বাড়ি। শুধু বর্ধমান শহরেই ছোট বড় ১৫০ থেকে ২০০টি হোর্ডিং ঝোলানো রয়েছে। এর জেরে শহরে দৃশ্যদূষণ হচ্ছে বলে সাধারণ নাগরিকদের দাবি। দিন দিন এই বিজ্ঞাপনের বহর বাড়ছে। এর জেরে ক্ষুব্ধ শহরবাসী।
শহরের বাসিন্দা বিজয় সেন বলেন, আগে এত বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং টাঙানো হতো না। সাম্প্রতিকালে যেন অত্যধিক হোর্ডিং টাঙানো হচ্ছে। সামনে পুজো। এখন বিজ্ঞাপনের সংখ্যা আরও বাড়বে। চারিদিকে এত বিজ্ঞাপন দেখতে ভালো লাগে না। শুধু তাই নয়, এই বিজ্ঞাপনের কারণে শহরের সবুজও কার্যত হারাতে বসেছে। বিপন্ন হচ্ছে বহু পুরনো গাছপালা। বর্ধমান পুরসভা শহরে সবুজায়নের উপর জোর দিলেও তাতে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বিজ্ঞাপন। এমনকী হোর্ডিং লাগাতে গিয়ে গাছের ডালপালা ছাঁটার ছবিও নজরে আসছে। আবার কোথাও গাছে পেরেক গেঁথে ঝোলানো হচ্ছে সাইনবোর্ড। এতে শহরের গাছপালার আয়ু কমছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানির অধ্যাপক জয়প্রকাশ কেশরী বলেন, এই বিজ্ঞাপন গাছেদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। গাছের শরীরের নানা প্রক্রিয়া এতে ব্যাহত হয়। সেই কারণে গাছের আয়ুও কমে যায়। অথচ নিয়ম অনুযায়ী কোনও গাছে বিজ্ঞাপন দিতে গেলে বনদপ্তরের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু তাতেও কীভাবে বেআইনিভাবে বিজ্ঞাপনদাতারা হোর্ডিং টাঙাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শহরের সবুজ দেখতে এসে চারিদিকে চোখে পড়ছে শুধু বিজ্ঞাপনের ঝলকানি। এ ব্যাপারে জেলার বনদপ্তরের আধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, গাছে হোর্ডিং লাগানো নিয়ম বহির্ভূত। এটা একেবারেই উচিত নয়। যেসব জায়গায় গাছের ক্ষতি করে বিজ্ঞাপন ঝোলানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই সেগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংস্থাকে বলা হয়েছে।