বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জেলার অধিকাংশ জমিতে আমন ধানের বীজতলা তৈরি হয়েছিল। সেই বীজতলা থেকে বীজ ধান অনেক জমিতে বসানোর কাজও শুরু হয়। টানা পাঁচ দিন জলে ডুবে থাকার ফলে গোটা বীজতলা হলুদ হয়ে যাবে। তারপর ফের বৃষ্টিতে যদি জল জমে যায় তাহলে বীজতলা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হবে। তা না হলে চড়া দামে বীজ কিনে চাষ করতে হবে বলে দাবি চাষিদের। এদিকে যেসব জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছিল, সেগুলি জলে ডুবে থাকার ফলে ধানের গোড়া নড়ে যাচ্ছে। ফলে নতুন করে অনেক জায়গাতেই ধান রোয়ার কাজ করতে হবে।
গলসি-১ ব্লকের চাষি শেখ মুক্তো বলেন, চাষের জমি থেকে সবেমাত্র জল নামা শুরু হয়েছিল। কিছুটা বীজতলা রক্ষা করা যেত। আবার বৃষ্টি শুরু হল। জানি না কতদিন চলবে। এদিকে যেসব জমিতে বীজ রোপণ করা হয়েছিল, সেগুলির গোড়া নড়ে গিয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যেত জল নামলে। কিন্তু তার আগেই ফের বৃষ্টি শুরু হল। তাই আতঙ্কে আছি।
এদিকে জলমগ্ন কৃষিজমির সার্বিক পরিসংখ্যান রাজ্য সরকারের কাছে ইতিমধ্যেই জমা দিয়েছে জেলা কৃষিদপ্তর। রাজ্য সরকারকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি-১ ও ২, গলসি-১ ও ২ ব্লকে সবচেয়ে বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। খণ্ডঘোষ ব্লকে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে কম বলে জানা গিয়েছে। জেলা কৃষিদপ্তর থেকে এই রিপোর্ট রাজ্য দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
জেলা কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারি-১ ব্লকে ১৪হাজার ২৭৫ হেক্টর জমির মধ্যে আট হাজার হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেমারি-২ ব্লকে আট হাজার ৫০০হেক্টর জমির মধ্যে সাত হাজার হেক্টর জমিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া গলসি-১ ব্লকে ৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির মধ্যে ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির ক্ষতি হয়েছে। এইসব এলাকায় আমনের মরশুমে বীজতলা বা ধান রোয়ার কাজ হয়েছিল। কৃষিদপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৬৫৭ হেক্টর কৃষিজমির মধ্যে ৬৭হাজার ৮০২হেক্টর জমিতে আমন চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও পাট ও সব্জি চাষের ক্ষেত্রেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কাটোয়া-২ ব্লকে ২৫০ হেক্টর জমির পাট চাষের ক্ষতি হয়েছে। ৪৮৫ হেক্টর সব্জি চাষের জমির মধ্যে ২৫০হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, জল নামা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ডিভিসি জল ছাড়া বন্ধ করেনি। পাশাপাশি নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এবার যদি জমিতে আবার জল জমতে শুরু করে, তাহলে সব ফসল শেষ হয়ে যাবে। জল জমি থেকে না নামা পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করা যাবে না। প্রতীকী ছবি