বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বছর পঁত্রিশের সইফুদ্দিনের বাড়ি হলদিয়ার হাদিয়া গ্রামে। টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তখন সবাই জেনে গিয়েছে পেট্রকেমে আগুন লাগার খবর। বাড়ি থেকে মুর্হূমুহূ ফোন আসছে সইফুদ্দিনের কাছে। তাকে না পেয়ে পাড়ার আর এক বন্ধুকে উদ্বিগ্ন বাড়ির লোকজন ফোন করেন। একই অবস্থা শেখ নাসিরুদ্দিনের। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়া জেলায়। তিনি এসেছেন শাটডাউন জবে কাজ করতে। তিনি বলেন, পেট্রকেমে শাটডাউন বা মেন্টেন্যান্স জবের সময় আসি। ওয়েল্ডিংয়ের কাজ জানি, তবে ঝুঁকি থাকায় অন্য কাজ করছিলাম। আগেও শাটডাউনের সময় আগুন লেগেছে, তবে এত বিধ্বংসী আগুন দেখিনি। বাড়ির লোকজনকে সুস্থ আছি বলে ফোন করে জানালাম।
পেট্রকেমের প্র্যাক্সএয়ার গেট বা শাটডাউন গেটে তখন কয়েকশো উদ্বিগ্ন শ্রমিকের ভিড়। সকলেই মোবাইল হাতে উদ্বিগ্ন হয়ে বাড়িতে বা পরিচিত জনকে ফোন করতে ব্যস্ত।
শাটডাউনের সময় হলদিয়া পেট্রকেম কার্যত মিনি ভারত হয়ে ওঠে। এবারও পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, তামিলনাড়ু, কেরল, বিহার থেকে প্রায় চার হাজার দক্ষ শ্রমিক ও ইঞ্জিনিয়ার এসেছেন। হলদিয়া, মহিষাদল, তমলুক, মেচেদার বিভিন্ন জায়গায় হোটেলে রয়েছেন তাঁরা। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয় শাটডাউন জবের কাজ। ১২ঘণ্টার শিফ্টে কাজ করেন তাঁরা। শ্রমিকরা বলেন, পেট্রকেমে প্রতিবারই শাটডাউন জবের সময় কমবেশি আগুন লাগে। তবে এবার এত সতর্কতার পরও কেন আগুন লাগল তা নিয়ে শ্রমিকরাও ধন্দে রয়েছে। গত ৭বছরে হলদিয়ায় বিভিন্ন কারখানায় পাঁচ-ছ’টি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দু’বছরের মধ্যে পেট্রকেমে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। ২০১৯সালে আগুনে ঝলসে ১৩জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে একজন আধিকারিক সহ মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়। কিছুদিন আগে আইওসিতেও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৩সালে পেট্রকেমের পাশে ধানসিঁড়ি পেট্রকেমে বিধ্বংসী আগুনে একটি ইউনিট ছাই হয়ে গিয়েছিল।