সংবাদদাতা, ঘাটাল: সোমবার ঘাটাল মহকুমার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সেচ ও জলপথ দপ্তরের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এদিন ঘাটাল ও দাসপুর-১ ব্লকের বন্যা কবলিত কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে তাঁরা জলবন্দি মানুষের হাতে ত্রাণ সামগ্রীও তুলে দেন।এদিন সুব্রতবাবু ঘাটালের বিবেকানন্দ মোড় পর্যন্ত গাড়িতে যান। তারপর নৌকায় করে অজবনগর গ্রামে গিয়ে ৫০টি জলবন্দি পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের হাতে ত্রিপল, বিস্কুট, চাল, পোশাক সহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেন। কিছুক্ষণ পর সৌমনবাবু সেখানে যান। বন্যা পরিদর্শন করে এসেই পঞ্চায়েত মন্ত্রীর প্রথম প্রতিক্রিয়া, বীভৎস! তিনি বলেন, এর আগেও আমি ঘাটালে অনেকবার বন্যা পরিদর্শনে এসেছিলাম। কিন্তু এত ভয়াবহ বন্যা এর আগে দেখিনি। মানুষজনের এই পরিস্থিতি দেখে আমার খুব খারাপ লাগছে। বহু মানুষ জলবন্দি রয়েছেন। তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেককেই উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। অনেকে বাড়ি থেকে আসতে চাইছেন না বলে সেখানেই কষ্ট করে রয়েছেন। আমি নিজে দেখে গেলাম। কী কী ক্ষতি হয়েছে প্রশাসনের কাছ থেকেও আমরা তালিকা পাব। সবকিছু নিয়ে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। সুব্রতবাবু ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতার জন্যই এখানে মাস্টার প্ল্যান হচ্ছে না।
সৌমেনবাবু বলেন, ব্যারেজের জল ছাড়াই এই পরিস্থিতির জন্য অনেকটা দায়ী। আমরা ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার মিটিং করে বলেছি, তারা যেন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে জল ছাড়ে। আমরা বলেছিলাম প্রত্যেক দিন ৫০ হাজার কিউসেক করে জল ছাড়া হোক। কিন্তু তারা আমাদের কথা রাখছে না। কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের রাজ্যের সঙ্গে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই রাজনীতি করে। সেচমন্ত্রী বলেন, মূল বাঁধ কোথাও ভাঙেনি। যশের পর আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মূল বাঁধগুলির রক্ষণাবেক্ষণের উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। তাই বড় বাঁধগুলি ভাঙেনি। তা না হলে এই মহকুমার আরও অনেক এলাকা প্লাবিত হয়ে যেতে পারত। বর্তমানে যে বাঁধগুলি ভেঙেছে সবই এক্স জমিনদারি বাঁধ। এগুলি ঠিক করতে হবে। আমরা সমস্ত খাল সংস্কার করার ব্যবস্থা করব। তখন আর এই পরিস্থিতি তৈরি হবে না। ঘাটাল ব্লকে বন্যা পরিদর্শন করার পরই দুই মন্ত্রী দাসপুর-১ ব্লকের নিজনাড়াজোল ও রাজনগর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় বন্যা পরিদর্শনে যান।