নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর গড়ার ঘোষণার পর থেকেই অণ্ডাল নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে ব্যবসায়ীদের। বিমান বন্দর চত্বরে রয়েছে গোল্ডেন সিটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ। ইতিমধ্যেই একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সেখানে বিনিয়োগ করেছে। আরও বিনিয়োগ টানতে এবার ওই শিল্পনগরীর মানোন্নয়নের উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। একটি আদর্শ শহরের আদলে পানীয় জল, রাস্তা, আলো থেকে নিকাশি, যাবতীয় পরিকাঠামো উন্নয়নের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। সেই নির্দেশ পেয়ে সোমবারই সবপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক বিভু গোয়েল। ডিপিএলের পুনরুজ্জীবনের পাশাপাশি অণ্ডাল বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে যেভাবে শিল্পবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার, তাতে স্পষ্ট যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃতীয় তৃণমূল সরকার শিল্পাঞ্চলের শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েছে।
জেলাশাসক বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অণ্ডালে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর গড়ে উঠছে। পাশাপাশি সেখানে শিল্পনগরীও রয়েছে। পুরো এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। রাস্তা, নিকাশি সহ সবকিছুর উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে।
শিল্পায়নের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজন পরিকাঠামো উন্নয়ন। উন্নতমানের জমি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুতের সুব্যবস্থা পর্যাপ্ত পরিমাণে পেলেই শিল্পপতিরা সেখানে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখান। রাজ্যে বিভিন্ন শিল্পতালুক গড়ে সেই পরিবেশই আগে তৈরি করেছিল সরকার। এবার সেই শিল্পতালুকে বিনিয়োগ টানতে সচেষ্ট রাজ্য। ইতিমধ্যেই বেশকিছু ক্ষুদ্র সংস্থা বিনিয়োগ করেছে বলে জানা গিয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানে শিল্পের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই এই এলাকায় রাজ্য সরকারের একাধিক উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার ঠিক আগেই জেলা সফরে এসে বেসরকারি অণ্ডাল বিমান বন্দরের সর্ববৃহৎ অংশীদার রাজ্য হয়েছে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই ঠিক হয়, এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে এক শিল্পনগরী গড়ে তোলারও পরিকল্পনা ছিল। তাই গোল্ডেন সিটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপের পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার এনিয়ে জেলাশাসককে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব। 
কয়লাখনি অঞ্চলে ধসের জন্য ওই এলাকাতেই রানিগঞ্জ পুনর্বাসন প্রকল্পে ফ্ল্যাট নির্মাণ হচ্ছে। সেখানে বিস্তর জল জমে রয়েছে। এই শিল্প শহরের নিকাশি সমস্যা দ্রুত মেটাতে ৩১ আগস্টের মধ্যে সেচদপ্তরকে একটি ডিপিআর জমা করতে বলা হয়েছে। পিডব্লুডিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, জাতীয় সড়কের সংযোগকারী এই বিমান বন্দর ও শিল্পনগরীর রাস্তাটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়। একটি পরিকল্পিত শিল্প শহরের নকশা সহ মাস্টার প্ল্যান দ্রুত তৈরি করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি এয়ারপোর্টের রানওয়ে থেকে বিমান রাখার জায়গা আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দু’টি বেসরকারি স্কুল, একটি বেসরকারি হাসপাতাল সহ একাধিক শিল্প সংস্থা বিনিয়োগ করেছে। এছাড়া অনেকেই‌ ঩বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সুবিধা নিতে চাইছেন অনেক ব্য‌বসায়ীই। এদিকে জমিদাতাদের জমির বদলে জমি দেওয়ার প্রক্রিয়াও দ্রুত শেষ করা নিয়েও বৈঠক আলোচনা হয়েছে। যাতে জমিদাতাদের জমির রেজিস্ট্রেশন হয়ে যায়, তা নিয়েও তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন।