কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেও এই মহামারী পুরোপুরি নির্মূল করা যায়নি। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা এখনও বন্ধ রয়েছে। তাই স্কুলের পড়ুয়াদের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম পুলকার পরিষেবাও বন্ধ। সেই কারণে পুলকারগুলি পরিচর্যার খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন মালিকরা। দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় পুলকার চালক ও খালাসিরা আগেই রুটিরুজির সন্ধানে অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। এবার মালিকরাও সেই পথেই পা বাড়িয়েছেন। সমস্ত রাজ্যেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বলে পুলকার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি। এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ পুলকার মালিক গাড়িগুলি কাটিংয়ে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা পানাগড় স্ক্র্যাপ ডিলারদের কাছে লোহার দরে সেগুলি বিক্রি করে দিচ্ছেন।
স্ক্র্যাপ ডিলার সম্রাট সিং বলেন, সরকারি নিয়মে পুরনো যেসব গাড়ির রাস্তায় চলাচলের মেয়াদ শেষ যায় সেগুলি স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এই প্রথম দেখলাম প্রায় নতুন স্কুলবাস এখানে স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করে দিচ্ছেন। খুবই ভয়াবহ পরিস্থিতি। আমাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরাও ওইসব বাসেই স্কুলে যেত। বহুদিন ধরেই স্কুল বন্ধ আছে। কবে খুলবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এই অসহায় অবস্থার শিকার বাস মালিকরাও। বাসগুলির রক্ষাণাবেক্ষণের খরচ জোগানোর সাধ্য নেই তাঁদের। গত ছ’মাসে কয়েকশো স্কুল বাস এই এলাকায় কাটিং হয়েছে। ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দামের বাস লোহার দরে বিক্রি করে দিয়েছেন মালিকরা। আমার কাছেও নতুন কয়েকটি বাস স্ক্র্যাপ করার জন্য বিক্রি করা হয়েছে। আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও ঝাড়খণ্ড সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাসগুলি বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে।
স্থানীয় স্কুল বাসের মালিক কিশোর মণ্ডল বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় বাস থেকে রোজগার হচ্ছে না। এখন স্কুল খোলার নিশ্চয়তা নেই। বাসগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছি না। আমাদের এখানকার বহু বাস মালিক লোকসান থেকে বাঁচতে গাড়িগুলি স্ক্র্যাপে বিক্রি করে দিয়েছি।
দুর্গাপুর পুলকার ভেহিকেল ওনার অ্যাসোসিয়েশনের দুই বর্ধমান জেলার সম্পাদক টোটোন দাস বলেন, দুই জেলায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার পুলকার ছিল। তাতে ৩০ হাজার বেকার যুবকদের কর্ম সংস্থান হচ্ছিল। আমদের কথা কেউ ভাবেও না। গাড়িগুলি পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। বিক্রি করতে চাইলে কেউ কিনছেও না। তেলের দামও এখন আগুন। স্কুল খোলা অনিশ্চিত থাকায় আমরা সকলে অন্য পেশা বেছে নিয়েছি। পরিস্থিতি যেদিকে এগচ্ছে, তাতে আরও অনেকেই গাড়ি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হবেন।