সংবাদদাতা, সিউড়ি: প্রবল বর্ষণে সিউড়ি মহকুমার সাতটি ব্লকের বেশকিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। নদী পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে ব্লক প্রশাসনের তরফে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হচ্ছে। জেলায় ২৪ ঘণ্টায় গড়ে ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দু’দিনে বীরভূমের অজয় নদের সিকাটিয়া ব্যারেজ থেকে মোট ৪০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। বৃষ্টি বাড়লে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়বে বলে জানা গিয়েছে। অজয় নদে জল বাড়ায় দুবরাজপুর ব্লকের নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে প্লাবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্লক প্রশাসনের দাবি, ইতিমধ্যে লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের পলাশডাঙা, দেবীপুর চর প্রভৃতি এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। জলের পরিমাণ আরও বাড়লে গ্রামবাসীদের অন্যত্র সরানো হবে। দুবরাজপুর ব্লকের বালিজুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলসাড়া ও মেজেগ্রামের মাঝে থাকা শাল নদীর উপর কজওয়ে জলে ডুবে গিয়েছে। এর ফলে বেলসাড়া, কুলেকুড়ি, পাঁচ পুকুর সহ বেশকিছু গ্রামের মানুষ অসুবিধায় পড়েছেন। দুবরাজপুর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। ১নম্বর ওয়ার্ডে একটি মাটির বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। দুবরাজপুরের বিডিও অনিরুদ্ধ রায় বলেন, বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে, অজয় তীরবর্তী এলাকায় মাইকিং করে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।
এছাড়া সিউড়ি-১ ব্লকের মল্লিকপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এরফলে বহু ফসল ও সব্জি জলের নীচে চলে গিয়েছে। মল্লিকপুর থেকে সিঙ্গুর যাওয়ার ভাসা ব্রিজ জলে ডুবে যাওয়ায় ঘুরপথে চলছে যাতায়াত। সিউড়ি-১ ব্লক প্রশাসনের দাবি, কোথাও কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। সিউড়ি-২ ব্লকের কোমা গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষন্না গ্রামে কয়েকটি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাজনগর ব্লকের তাঁতিপাড়া এলাকায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে জল ঢুকেছে। ওই ব্লকের চন্দ্রপুরের সালুকা ও লাউজোর এলাকায় রাস্তার উপর দিয়ে চন্দ্রভাগা নদীর জল বয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মহম্মদবাজার ব্লকের আঙ্গারগড়িয়া এলাকায় বৃষ্টির জেরে দুটি মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। এছাড়া ময়ূরাক্ষী নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলিতে প্লাবনের আশঙ্কায় সতর্কতামূলক প্রচার করছে প্রশাসন। এছাড়া রামপুরহাট মহকুমার দেবগ্রাম ও ভগবতীপুরের কাছে ব্রাহ্মণী নদীর কজওয়ে জলের নীচে চলে গিয়েছে। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, সিকাটিয়া ছাড়া আর কোথাও জল ছাড়া হয়নি। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।