বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে উপকূল এলাকা বাঁচাতে ম্যানোগ্রোভ অরণ্যের কোনও বিকল্প নেই। সাইক্লোনের পর গত ২৮মে মুখ্যমন্ত্রী দীঘা সফরে এসে এমনটাই বার বার বলেছেন। একইসঙ্গে নদীবাঁধ বরাবর এলাকায় ভেটিভার ঘাস লাগানোর নির্দেশ দেন। সেইমতোই প্রস্তুতি নিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। নন্দীগ্রাম-১, খেজুরি-২, দেশপ্রাণ, কাঁথি-১ এবং রামনগর-১ ও ২ব্লক এলাকায় প্রায় ১২০কিলোমিটার এলাকায় ৮০০হেক্টর জমিতে ম্যানগ্রোভ লাগানো হবে। লবনাক্ত মাটিতেই ম্যানগ্রোভ জন্মায়। সেজন্য সমুদ্র উপকূল এলাকা বেছে নেওয়া হয়েছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর জমি চিহ্নিত করেছে।
এছাড়াও হলদি, হুগলি, রসুলপুর এবং রূপনারায়ণ নদীবাঁধ বরাবর প্রায় ৩০লক্ষ ভেটিভার লাগানো হবে। ২০০থেকে ২৫০কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভেটিভার লাগানো হবে। নদীবাঁধ ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ভেটিভারের বিকল্প নেই। আগস্ট মাস পর্যন্ত ম্যানগ্রোভ লাগানোর জন্য মাটি খোঁড়ার কাজ চলবে। ষাঁড়াষাঁড়ির বানের পরই চারাগাছ লাগানো হবে। এরফলে অনেকের কাজের সুযোগ তৈরি হবে।
শুধু বৃক্ষরোপণ নয়, রক্ষণাবেক্ষণেও জোর দিচ্ছে প্রশাসন। সেজন্য ওই কাজে যুক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যাদের গাছের থাকা এবং না থাকার ভিত্তিতেই পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। প্রত্যেক গোষ্ঠীকে নির্দিষ্ট সংখ্যক চারাগাছ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে। যেখানে যত বেশি গাছ টিকবে সেখানকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যারা তত বেশি পারিশ্রমিক পাবেন। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই প্রশাসন এই কাজ হাতে নিচ্ছে।
ফি-বছর একটি করে সাইক্লোনে তছনছ হয়ে যাচ্ছে সমুদ্র উপকূল এলাকা। ২৬মে যশ সাইক্লোন এবং সমুদ্রের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে সমুদ্রবাঁধ ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে। উপকূলবর্তী বহু গ্রামে নোনা জল ঢুকে গিয়েছে। বিশেষ করে রামনগর-১ ও ২ ব্লকের উপকূল বরাবর গ্রামগুলির অবস্থা শোচনীয়। গত কয়েক বছর ধরে দীঘা উপকূল এলাকায় ঝাউবন কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে। বালিয়াড়ি কেটে নতুন নতুন হোটেল গজিয়ে উঠছে। প্রতিনিয়ত প্রকৃতিকে ধ্বংস করে কংক্রিটের জঙ্গলে ঢেকে দীঘার পরিধি আরও বেড়েই চলেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রেহাই পেতে বৃক্ষরোপণ ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। সেজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার উপকূল এলাকায় ম্যানগ্রোভ লাগানোর উপর জোর দিয়েছেন। নদীবাঁধ রক্ষা করার জন্য ভেটিভার লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, আমরা উপকূল বরাবর পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগাব। এজন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। প্রশাসনিক অফিসারদের পাশাপাশি সেচ, বনদপ্তরের অফিসাররাও আছেন। একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করেই গোটা কর্মসূচি রূপায়ণ করা হবে।