নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিভিন্ন স্থায়ী সমিতিতে রদবদলের লক্ষ্যে আগামী ১২মে, বুধবার নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসছে তৃণমূল। ওইদিন বেলা ১২টায় জেলা পরিষদে এ নিয়ে বৈঠক হবে। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র সহ দলের অন্যান্য নেতারা সেখানে উপস্থিত হবেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন জেলা পরিষদ সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ভোটে বিজেপির হয়ে কাজ করার জন্য কয়েকজনকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। আবার দল থেকে কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলছুট সদস্যরা বিভিন্ন স্থায়ী সমিতিতে মেম্বার ছিলেন। এখন তাঁদের বাদ দিয়ে স্থায়ী সমিতি পুনর্গঠন করা হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারীকে ৭মে বহিষ্কার করেছে জেলা তৃণমূল। ওই স্থায়ী সমিতিতে নতুন কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হবেন। সৌমেনবাবু বলেন, বুধবার জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে একটা মিটিং ডাকা হয়েছে। 
জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে গতবছর অপসারিত হয়েছিলেন সোমনাথ বেরা। তাঁর পুনর্বাসনের চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানা গিয়েছে। বর্তমান পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ স্বপনকুমার দাসকে মৎস্য স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ করে সোমনাথ বেরাকে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে ফের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এবার তমলুক বিধানসভা থেকে নির্বাচিত সৌমেন মহাপাত্রের ইলেকশন এজেন্ট ছিলেন সোমনাথ বেরা। দলীয় প্রার্থীর জয়ে তাঁর ভূমিকার কথা মাথায় রেখেই পুনর্বাসনের ভাবনা।
উল্লেখ্য, ভোটের আগেই শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক থেকে জেলা পরিষদ আসনে নির্বাচিত তনুশ্রী জানা ও রাখি আদক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। গত ১৩ মার্চ দু’জনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়াও তমলুক ব্লক থেকে জেলা পরিষদে নির্বাচিত ছায়া মাইতি ভোটের আগেই বিজেপিতে যোগ দেন। একই পথে হেঁটে দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন হলদিয়া থেকে নির্বাচিত সোমনাথ ভুঁইঞা এবং কাঁথি-১ ব্লক থেকে নির্বাচিত চন্দ্রশেখর মণ্ডল। তাঁরা প্রত্যেকেই ভোটে বিজেপির হয়ে প্রচার করেছেন। ওই সদস্যরা বিভিন্ন স্থায়ী সমিতির মেম্বার। যেমন, তনুশ্রী জানা এবং সোমনাথবাবু পূর্ত স্থায়ী সমিতিতে আছেন। ভোটের সময় বিজেপির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে একাধিক জেলা পরিষদ সদস্যকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন, তমলুক ব্লক এলাকা থেকে নির্বাচিত আরও এক সদস্যাকে ইস্তফা দেওয়ার বার্তা পাঠানো হয়েছে।
জেলা পরিষদে সভাধিপতি পদেও রদবদলের সম্ভাবনা তীব্র। সভাধিপতি আসনটি ওবিসি সংরক্ষিত। এই মুহূর্তে সভাধিপতি পদে মূল দাবিদার দু’জন। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শেখ সুপিয়ান। দ্বিতীয়জন হলেন দেশপ্রাণ ব্লক থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য এবং পটাশপুর বিধানসভার নবনির্বাচিত বিধায়ক উত্তম বারিক। বর্তমানে সভাধিপতি দেবব্রত দাস অসুস্থ। গলায় সংক্রমণের কারণে তিনি কয়েকমাস ধরে ভুগছেন। ৬০ আসন বিশিষ্ট পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদে বিস্তর রদবদলের সম্ভাবনা প্রবল। জেলা পরিষদে ওই রদবদলের পর একাধিক পঞ্চায়েত সমিতিতেও রদবদল হবে। বিশেষ করে ভোটের সময় যাঁরা বিজেপির হয়ে খেটেছেন তাঁদের অপসারিত করে দলের নেতাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে।