সংবাদদাতা, সিউড়ি: সাইথিয়ার অধিকাংশ ওয়ার্ডে তৃণমূলের হার। পুরভোটকে সামনে রেখেই এবার সাঁইথিয়ায় উঠল কাউন্সিলার বদলের দাবি। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণের পরেই এই দাবি আরও জোরালো হচ্ছে। সাঁইথিয়া পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলারদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল নির্বাচনের আগে। সেই অভিযোগকেই বিধানসভা ভোটের প্রচারে তুলে ধরেছিল এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। তার জেরেই বিধানসভা নির্বাচনে সাঁইথিয়া পুরসভা এলাকায় আশানুরূপ ফল পেয়েছে বিজেপি। আর প্রায় সিংহভাগ ওয়ার্ডে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে আসন্ন পুরসভা নির্বাচনের আগে সাঁইথিয়া পুরসভা এলাকায় কাউন্সিলারের মুখ বদলের দাবি জোরালো হচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে। এলাকার তৃণমূল নেতাদের অধিকাংশের দাবি, যদি পুরনো কাউন্সিলাররা আবার পুরনির্বাচনে টিকিট পায় তাহলে ফলাফল আদৌ পরিবর্তন হবে কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন আছে। এই বিষয়টিকে ইতিমধ্যেই ফল বিশ্লেষণের সময় জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের নজরে আনতে চলেছে শহর নেতৃত্ব।তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে এবার ফের ক্ষমতা কায়েম রাখতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে পুনর্বারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন নীলাবতী সাহা। সাঁইথিয়া কেন্দ্রে তাঁর মোট প্রাপ্ত ভোট এক লক্ষ দশ হাজার ৫৭২। তিনি বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহাকে ১৫ হাজার ২৪৩ ভোটে পরাজিত করেছেন। কিন্তু সাঁইথিয়া পুরসভা এলাকায় ভোটের ফলাফল ভিন্নরূপ। পুর এলাকার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র তিনটি ওয়ার্ডে বিজেপির থেকে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এর কারণ হিসেবে এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব কাউন্সিলারদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগেই দায়ী করছেন। পুর এলাকার গৃহনির্মাণ প্রকল্পের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। আর এই অভিযোগকেই বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারে হাতিয়ার করেছিল বিজেপি। দুর্নীতি আদৌ হয়েছে কিনা সেই বিষয়টি যাচাই না করলেও বিজেপির এই প্রচারকে মেনে নিয়ে তাদের দিকেই ঝুঁকেছে শহরবাসী।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ভুল শুধরে নিতে দ্রুত ময়দানে নামতে চলেছে সাঁইথিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। পুরসভা নির্বাচনের আগে কড়া হাতে দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর আরও বেশি মাত্রায় কীভাবে সাঁইথিয়া শহরের জন্য উন্নয়ন করা যায় সেই বিষয়টিতেও জোর দিচ্ছে প্রশাসক মণ্ডলী।
কিন্তু আসন্ন পুরসভা নির্বাচনে সাঁইথিয়া পুরসভায় নতুন মুখ আনা হবে কিনা সেই নিয়ে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছে শহরের তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, আমরা ফলাফল নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছি। তবে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারব না। এটি দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই দলের অভ্যন্তরে আলাপ আলোচনার পর মন্তব্য করব।