গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকের আটটি, কাঁথি-৩ ব্লকের ছ’টি এবং এগরার একটি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে উত্তর কাঁথি বিধানসভা গঠিত। দেশপ্রাণ ব্লকের মুকুন্দপুর এলাকার বাসিন্দা তরুণবাবু দীর্ঘদিন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। এর আগে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। নেতা হিসেবে এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে তরুণবাবুর।
তৃণমূল প্রার্থীর হার আর বিজেপি প্রার্থীর জয়ের কারণ নিয়ে এলাকার তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁরা জানাচ্ছেন, দলেরই কিছু নেতা-কর্মী আমাদের সঙ্গে ঘুরেছেন। কিন্তু কাঁথির দলবদলু এক বিজেপি নেতার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভিতরে ভিতরে বিজেপি হয়েই কাজ করেছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে এসেছেন, বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে। তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার কোনও কারণ নেই। আবার, অনেক নেতা-কর্মী একইভাবে বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভোটে কাজই করেননি। স্রেফ বসে গিয়েছেন। জেলাস্তরের নেতাদের কেউ কেউ ভেবেছিলেন, তরুণবাবুর যেহেতু উপর মহলে ভালো যোগাযোগ রয়েছে, উনি জিতলে হয়তো মন্ত্রীও হয়ে যেতে পারেন। তখন তাঁদের গুরুত্ব কমে যাবে। তাই তাঁরাও ভিতরে ভিতরে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য মানুষকে উদ্ধুদ্ধ করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় চাকরি দেওয়ার নামে ফর্ম পূরণ করানো থেকে শুরু করে নানাভাবে মানুষকে আর্থিক প্রলোভন দিয়েছে বিজেপি।
দেশপ্রাণ ব্লকের বামুনিয়া, আঁউরাই প্রভৃতি এলাকায় কয়েকজন তৃণমূল নেতা এভাবে অন্তর্ঘাত করেছেন বলে দলীয় নেতৃত্বদের প্রাথমিক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দীনেশ দাস বলেন, তরুণবাবুর সময়ে দেশপ্রাণ ব্লক এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হয়েছে। সেটা এলাকার প্রতিটি মানুষই জানেন। উনি সারা বছরই মানুষের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ান। কোনওভাবেই তাঁর পরাজয় সম্ভব নয়। আসলে এলাকার কিছু নেতা-কর্মী গদ্দারি করে তাঁকে হারিয়ে দিল। তরুণবাবু ৩০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবেন বলে আমরা আশা করেছিলাম। ৩০ হাজার না হলেও অন্তত ৫-৭ হাজার ভোটের ব্যবধানে তাঁর জয় অবধারিত ছিল।
কাঁথি-৩ ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অশোক প্রধান বলেন, একথা স্বীকার করতেই হবে, বিজেপির একটা হাওয়াও কাজ করে গিয়েছে। মানুষ হয়তো ভেবেছিলেন, এবার আর তৃণমূল নয়। বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে। তাই বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন। যদিও উত্তর কাঁথিতে বিজেপির সংগঠন সে অর্থে ছিল না। মিটিং-মিছিলগুলিতেও সেভাবে ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। নেতৃত্বরা বলেন, আমরা খুব শীঘ্রই প্রতিটি অঞ্চলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বুথস্তরের ফলাফল পর্যালোচনা করব। কী কারণে এই হার, তদন্ত করে দেখা হবে। অন্তর্ঘাতের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, এমন নেতা-কর্মীদের নাম আমরা সংগ্রহ করছি। দলীয়ভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তরুণবাবু বলেন, এই ফল আমার ও আমার দলের কাছে অপ্রত্যাশিত। ভাবতে পারিনি, উত্তর কাঁথি আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে। তবে অনুমান করতে পারছি, কারা আমাকে পিছন থেকে ছুরি মেরেছে।