পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
একুশের নির্বাচনের আগে বিজেপি আশা করেছিল শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়তি অক্সিজেন দেবে তাদের। কারণ তৃণমূল বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুই ও রায়নার একটি ব্লকের সভাপতির দ্বন্দ্ব নিয়ে চিন্তায় ছিল শাসক দল। তাই নেপালবাবুকে সরিয়ে গলসি কেন্দ্রের প্রার্থী করেছেন তৃণমূল নেত্রী। আর এখানে শম্পাদেবীকে টিকিট দিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মাস্টার স্ট্রোক দিয়েছেন বলেই দলের একাংশের মত। প্রার্থীপদ পাওয়ার পরেই শম্পাদেবী বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে যেমন জোর দিয়েছেন, পাশাপাশি দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করছেন। সবাইকে ডেকে একসঙ্গে চলার পক্ষপাতী তৃণমূল প্রার্থী। অধিকাংশ নেতারা ভোটের আগে দলের প্রার্থীর ডাকে অভিমান ভুলে ভোটযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তবে অনেকেই আছেন যাঁরা সামনে সক্রিয় থাকলেও পিছনে সাবোতাজ করতে পারেন বলেও আশঙ্কা আছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জেলা সফরে এসে শম্পাকে ডেকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছেন। পাশাপাশি রায়না-১ ব্লক সভাপতি বামদাস মণ্ডলকে কানে কানে পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন।
রায়নার বামেদের শক্ত ঘাঁটি এখন নড়বড়ে। গত বিধানসভার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মাত্র ৪৪৮ ভোটে হার হয়েছিল সিপিএম প্রার্থীর। এবার এই নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট তাদের ভোটের শতাংশ বাড়ালেও স্বস্তি দিচ্ছে না। কারণ তারা লোকসভা নির্বাচনে ক্ষয়িষ্ণু। গত বিধানসভায় ৪৫.৫৫ শতাংশ বাম ভোট গত লোকসভায় ১৫ শতাংশে এসে ঠেকেছে। সেখানে বিজেপি গত বিধানসভায় ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে লোকসভায় ২৭ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। এই ভোটবৃদ্ধি গেরুয়া শিবিরকে অক্সিজেন দিচ্ছে। তবে, লোকসভার পর থেকে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মাথাব্যথার বিশেষ কারণ গেরুয়া শিবিরে। অনেক পুরনো কর্মীরা আজ নিষ্ক্রিয়। দল তাঁদের যোগ্য সম্মান দেয়নি বলে তাঁরা বসে গিয়েছেন। তবে ভোট অঙ্কে শাসক দলের কোনও চিন্তা থাকার কথা নয়, লোকসভায় তাদের ভোট বেড়েছে। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে ৪৫.৭৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। লোকসভায় চূড়ান্ত বিজেপি হওয়াতেও ৫২.৮ শতাংশ ভোট নিজেদের দখলে রাখে ঘাসফুল শিবির। লোকসভার দলীয় প্রার্থী এখানে ৫৮ হাজার ৮৪৯ ভোটে লিড পেয়েছিলেন।
ভোট প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী শম্পা ধাড়া স্থানীয় কিছু সমস্যা নিয়ে ক্ষোভের আঁচ পেলেও সরকারের উন্নয়নে যে মানুষ খুশি, তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আগেরবারের বিধায়ককে এলাকায় খুব একটা পাওয়া যায়নি বলে ক্ষোভ আছে মানুষের। তারপরেও শম্পাকে ঘরের মেয়ের মতো আপন করছেন সকলে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়ে তার কাজ সকলেই জানেন। প্রচণ্ড কর্মঠ ও অনগ্রসর শ্রেণীর মুখকে দলনেত্রীও পছন্দ করেন। সেটি ভালোভাবে জানেন এলাকার মানুষ। শম্পাদেবী বলেন, এলাকায় মানুষের কোনও কাজ আর বাকি থাকবে না। জেলার সভাধিপতি হিসেবে মানুষের পরিষেবা দিয়েছি। এবার রায়নার মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। প্রচারে আমার উপর হামলা করা হল। এর জবাব মানুষ ভোটবাক্সে দেবেন। রায়নার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির দুরবস্থাকেই বিরোধীরা প্রচারে অস্ত্র করেছে। এলাকায় সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি। জেলার অধিকাংশ চালকল এই কেন্দ্রের মধ্যেই অবস্থিত। সেই কলের দূষণে জেরবার সাধারণ মানুষ। চাল কলের বর্জ্য কৃষিজমিতে মিশে জমির ক্ষতি হচ্ছে। বিজেপি প্রার্থী মানিক রায় বলেন, রায়না বিধানসভায় আমি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ভোটে জিতব। যেখানেই প্রচারে যাচ্ছি মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে আসছেন। এবার মানুষ ভোট দিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনবেন। সিপিএম প্রার্থী বাসুদেব খাঁ বলেন, সরকারি পরিষেবা পেতে মানুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হয়নি। আমরা জিতলে সেই দাবি পূরণ হবে। সারা দেশব্যাপী বিজেপি একটি হাওয়া তুলছে। সেই হাওয়ায় ওরা জিততে চাইছে। তা কিন্তু হবে না। যখন বিধায়ক ছিলাম না, তখনও কাজ করে গিয়েছি। মানুষ তা দেখেছেন।