রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
কয়লা কাণ্ডে জেলার প্রাক্তন পুলিস সুপার থেকে বর্তমান মহকুমা পুলিস আধিকারিক ইতিমধ্যে সিবিআইএর ডাক পেয়েছেন। সিবিআইএর একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কয়লার টাকা শুধু পুলিস নয়, জেলার আরও অনেকের কাছেই গিয়েছে।
তালিকায় রয়েছেন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী থেকে রাজনৈতিক দলের নেতারাও। মূল অভিযুক্ত লালার বেশকিছু সম্পত্তি পুরুলিয়া থেকেই লেনদেন হয়েছে। সেই লেনদেনের মধ্যস্থতায় কারা ছিল, সিবিআই তাও খতিয়ে দেখছে। তাই এই কাণ্ডে জেলার একাধিক প্রভাবশালী ডাক পেতে পারেন বলে মনে করছেন জেলাবাসী।
নিতুড়িয়া এলাকায় চায়ের দোকানে আড্ডা জমিয়েছিলেন মধ্য বয়স্ক কয়েকজন মানুষ। কয়লা কারবার নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই একটু কাছে ডেকে বললেন, বাম আমল থেকে কয়লাকারবারীদের সক্রিয়তা ছিল এই এলাকায়। সেই সময় পুরুলিয়া থেকে সুদূর ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত এই কারবারের পরিধি ছিল।
তবে সেই সময় মাফিয়াদের রাজনৈতিক নেতাদের তোয়াজ করে চলতে হতো। পরে মাফিয়ারাও নিজেদের ব্যবসার পট পরিবর্তন করেন। শুরু হয় সিন্ডিকেট রাজ। মাফিয়াদের একাংশ সরাসরি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে, কিছু কয়লা মাফিয়ার প্রত্যক্ষ মদতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় হিংসা ছড়িয়েছিল।
কয়েকমাস আগে কয়লা কারবারিদের আয় বর্হিভূত সম্পত্তির হদিশ পেতে নামে কেন্দ্রীয় আয়কর দপ্তর। নিতুড়িয়া, সাঁতুড়ি এলাকার সাতজনের বেশি কয়লা মাফিয়ার বাড়িতে চলে তল্লাশি। পরে সিবিআই দায়িত্বভার নেয়। তাদের প্রথমে নজর পড়ে লালা।
ইতিমধ্যে সিবিআই লালার সমস্ত সম্পত্তির যেমন হদিশ পেয়েছে, তেমনই তার কাছ থেকে কারা কত পেয়েছে তার তালিকাও হাতে পেয়েছে। তবে গোয়ান্দাদের মত, লালা এখনও সম্পূর্ণ তথ্য দেয়নি।
লালা যেদিন থেকে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিতে শুরু করেন, সেদিন থেকেই জেলার বেশকিছু প্রভাবশালী প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন।
জেলার এক পুলিস কর্তা বলেন, বাঁকুড়ার আইসি অশোক মিশ্র গ্রেপ্তার হওয়ার পর বোঝা গিয়েছিল ঘটনায় অনেকে যুক্ত। ইতিমধ্যে আরও কয়েকজন আধিকারিক ডাক পেয়েছেন।
সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেওয়া আধিকারিকদের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, কীভাবে এই চক্র চলত। কেন তাঁরা কয়লা কারবারে বাধা দেননি। সিবিআই তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, প্রভাবশালীদের কাজে লাগিয়ে লালা পুরুলিয়া শহর সহ একাধিক জায়গায় শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও বেনামে প্রচুর সম্পত্তি কিনে রেখেছে। রঘুনাথপুরে ইটভাটা, বেসরকারি স্কুল, পর্যটন ক্ষেত্রে গেস্ট হাউস তৈরিতেও টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। সেই বিনিয়োগের মধ্যস্থতায় শুধু রাজনৈতিক নেতারাই নয়, অনেক প্রভাবশালীর নাম রয়েছে। ইডি লালার সম্পত্তি অ্যাটাচ করে জেলায় তদন্তে নামতে চলেছে। তাতেই অনেক নেতা ও প্রভাবশালীর রাতের ঘুম উবে গিয়েছে।
বিজেপির জেলা সম্পাদক রাজেশ চিন্না বলেন, কয়লা নিয়ে দল দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে গিয়েছে। জেলার সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাত কয়লা পাচার নিয়ে কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন।
রঘুনাথপুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী হাজারি বাউরি বলেন, কয়লা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। সাত বছর কিছু না করে ভোটের আগে মাথাচাড়া দিয়েছে। সঠিক তদন্ত হলে দিল্লির অনেক প্রভাবশালীর যোগ পাওয়া যাবে।