সংবাদদাতা, কাটোয়া: ভোটের আগে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল আউশগ্রাম বিধানসভার বেরেন্ডা এলাকা। শুক্রবার রাতে দু’দলের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ঘটনায় তৃণমূলের বেশকিছু বাড়ি ও বাইক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। দলের বুথ সভাপতিকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। চার তৃণমূল কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিস মোট ন’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এনিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরাই তাদের দলের কর্মীদের মারধর করেছে। আর বিজেপির কর্মীদেরই পুলিস ধরে নিয়ে গিয়েছে। এব্যাপারে পূর্ব বর্ধমানের ডিএসপি(ডিঅ্যান্ডটি) অভিজিৎ পালচৌধুরী বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত মোট ৯জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন রাতে আউশগ্রাম-১ ব্লকের বেরেন্ডা অঞ্চলের কুড়ুম্বা গ্রামের ঘটনা। তৃণমূলের অভিযোগ, আচমকা বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। একের পর এক তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে মারধর, ভাঙচুর চালানো হয়। তৃণমূলের আটটি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।  তৃণমূলের অভিযোগ, শনিবার কুড়ুম্বা গ্রামে শাসকদলের প্রার্থী অভেদানন্দ থান্ডারের সমর্থনে সাংসদ অসিত মালের একটি পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেইমতো রাত থেকে ওই এলাকায় তৃণমূল কর্মীরা পতাকা বাঁধছিলেন। অভিযোগ, ঠিক সেইসময় বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। ঘটনায় ওই অঞ্চলের প্রধান অন্তরা ঘোষের বাবা সিদ্ধার্থ ঘোষ, বুথ সভাপতি রেনু মেটে সহ অন্যান্যরাও জখম হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, আমরা মিটিংয়ের জন্য দলীয় পতাকা বাঁধছিলাম। ঠিক তখনই আচমকা বিজেপির লোকজন লাঠি, রড নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। বুথ সভাপতিকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি-ঘর ভাঙচুর চালানো হয়েছে। বেরেন্ডা অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি হাকিম শেখ বলেন,  ভোটের আগে বিজেপি এখানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে চাইছে। এটা শান্তিপ্রিয় এলাকা। 
বেরেন্ডা অঞ্চলের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের দলীয় কর্মীরা পতাকা বাঁধছিলেন। সেসময় তৃণমূলের কয়েকজন এসে আমাদের পতাকা খুলে দেয়। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদেরই মারধর করা হয়। তাতে বেশ কয়েকজন কর্মী জখম হয়। আউশগ্রামের বিজেপি প্রার্থী অভেদানন্দ থান্ডার বলেন, এখানে বিজেপির কোনও সংগঠন নেই। তাই ভোটের আগে পরিস্থিতি গরম করতে চাইছে। 
এদিন গোটা গ্রামে আতঙ্কের রেশ কাটেনি। বাসিন্দারা ভয়ে সিঁটিয়ে আছেন। গ্রামের কয়েকজন বলেন, বিজেপির ছেলেরা এসে রীতিমতো রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে। থালা-বাসন ভেঙে দিয়েছে।