সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন এ রাজ্যের নারীরা কতটা সুরক্ষিত প্রচারে বেরিয়ে তা তুলে ধরলেন বীরভূম জেলার তৃণমূল প্রার্থীরা। কোথাও মহিলাদের নিয়ে সভা করলেন, কোথাও আবার বাড়ি গিয়ে বয়স্ক মহিলাদের হাতে পুস্পস্তবক তুলে দিয়ে মিষ্টি মুখ করালেন তাঁরা। উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির তীব্র সমালোচনাও শোনা গিয়েছে তাঁদের গলায়। 
তৃণমূলের দাবি, বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যের মহিলারা বেশি সুরক্ষিত। মহিলাদের ওপর সবথেকে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে। বিশ্ব নারী দিবসের দিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই তথ্য তুলে ধরে প্রচার চালালেন তৃণমূল প্রার্থীরা। এদিন লাভপুর বিধানসভার জামনা গ্রামে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রচার করেন তৃণমূল প্রার্থী তথা দলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ। তিনি বলেন, বাংলায় নারীরা সুরক্ষিত। বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে নিত্যদিন নারীদের উপর নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসছে। এ রাজ্যে অন্যায় হলে বিচার হয়। ওখানে পুলিস ও সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। উল্টে নির্যাতিতার বাবাকে গুলি করে খুন করা হয়। প্রচারে মহিলাদের সামনে এই তথ্যই তুলে ধরছি। এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের জন্য যেসব প্রকল্প চালু করেছেন তার সাফল্যের খতিয়ানও তুলে ধরছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনে আজ নারীরা সুরক্ষিত। তাই সকলেই আবার বাংলার মেয়েকেই চাইছে। এদিন রামপুরহাটের দলীয় কার্যালয়ে প্রার্থী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেন তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের নেতৃত্ব। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি সাহারা মণ্ডল, শহর সভাপতি শঙ্করী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। পরে শহরের প্রবীণ পাঁচজন মহিলার বাড়ি পৌঁছে তাঁদের হাতে পুস্পস্তবক ও মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেন তাঁরা। পরে মহিলাদের নিয়ে শহরে প্রচারে বেরিয়ে এ রাজ্যে নারীদের সুরক্ষা ও তাঁদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্প তুলে ধরে প্রচার চালান আশিসবাবু। তিনি বলেন, বিশ্ব নারী দিবসের দিন উত্তরপ্রদেশের নারীদের করুণ অবস্থার প্রতিকার চাইছি আমরা। সেখানে কোথাও মহিলাদের ধর্ষণ করে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোথাও আবার নির্যাতিতার বাবাকে খুন করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে নারীরা যে অনেক বেশি সুরিক্ষিত সেটা সমীক্ষায় প্রকাশিত হয়েছে। আর যোগী আমাদের রাজ্যে এসে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। মহিলাদের কাছে তাঁদের মিথ্যাচারের জবাব দেওয়ার আবেদন রাখছি। এদিন দুবরাজপুর কেন্দ্রের মহিলা প্রার্থী নতুন মুখ অসীমা ধীবর নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের লোবা অঞ্চলের আদিবাসী, তফসিলি মহিলাদের নিয়ে সভা করেন। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের জন্য অনেক করেছেন। এ বারের নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় ৫০ শতাংশ মহিলাকে রেখেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনিই মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে আসছেন। সম্মান দিচ্ছেন। বক্তব্যর মাধ্যমে সেটাই তুলে ধরে বিরোধীদের কুৎসার জবাব দিতে মহিলাদের একজোট হওয়ার আহ্বান জানালাম।  
অন্যদিকে দলীয় কার্যালয়ে মহিলাদের নিয়ে মিটিং করে প্রচার সারেন সাঁইথিয়া কেন্দ্রের প্রার্থী নীলাবতি সাহা। সেখানে তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নারীদের সাবলম্বী করে তুলতে স্বনির্ভর দল গড়ে, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান করে চলেছেন, যা এক দৃষ্টান্ত। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এরাজ্যে নারীরা আজ বেশি সুরক্ষিত।
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, যে রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী নারীদের সম্মানের দাম বেঁধে দেন, সে রাজ্যে নারী কোথায় সুরক্ষিত। মহিলা নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ায় মহিলা পুলিস অফিসার দয়মন্তী সেনকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওঁরা হাথরাস না দেখে এরাজ্যের নারীদের করুণ পরিস্থিতি দেখুক।