বিদ্যার্থীরা পড়াশুনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবে। নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়বে। অতিরিক্ত চিন্তার জন্য উচ্চ ... বিশদ
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৪৫মিনিট নাগাদ পুরুলিয়া সার্কিট হাউস থেকে বেলগুমা পুলিস লাইনে এসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কনফারেন্স হলে রিমোটের মাধ্যমে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ও মানবাজারে এবং মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে এসবিএসটিসির বাস ডিপো এবং টার্মিনাসের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এবং ঝাড়গ্রামেও ডিপো ও বাসটার্মিনাসের শিলান্যাস করেন। এদিন তিনি মোট ৩৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং তিনটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জঙ্গলমহলজুড়ে গত ন’বছরে পরিকাঠামোগত নানা উন্নয়ন করা হয়েছে। এবারও জঙ্গলমহল উৎসব হবে। অনেকে হস্তশিল্প দীর্ঘদিন বিক্রি করতে পারেননি। তাই জেলায় জেলায় ৬২১টি মেলা হচ্ছে। অনেকে প্রচার পেতে একটা প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য একটা অনুষ্ঠান করে। কিন্তু, আমাদের সরকারের এত কাজ হয় যে, একসঙ্গে একগুচ্ছ প্রকল্পের সূচনা করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পুরুলিয়ার জলের সমস্যার বিষয়টি নিয়ে এখন থেকেই জেলাশাসককে পরিকল্পনা করে নিতে বলব। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে গ্রীষ্মে জলের সমস্যা রয়েছে। তাই আগে ভাগে তৈরি থাকতে হবে। অযোধ্যা পাহাড় সহ জেলার পর্যটন শিল্পে জোর দেওয়ার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, বাঘমুণ্ডি কিংবা অযোধ্যা পাহাড় বা জেলার অন্যত্র রূপসী বাংলার সৌন্দর্যকে কাজে লাগাতে হবে। তার জন্য হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কথা বলে আরও হোটেল তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। বহু মানুষ শ্যুটিং করতে এখানে আসেন। পুরুলিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে তাঁরা মুগ্ধ হন। ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী এই এলাকায় বহু মানুষ বেড়াতে আসেন। কিন্তু, থাকার জায়গাই নেয়। একটা-দু’টো মাত্র হোটেল রয়েছে। এখানে আরও অনেক হোটেলের সম্ভাবনা আছে। লোকে তো এই জেলায় আসতে চান।
তিনি আরও বলেন, দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে যাঁদের কাজ এখনও হয়নি, তাঁদের সমস্যা এবার মিটিয়ে দিতে হবে। সাধারণ মানুষের কোনও অভিযোগ যাতে না থাকে, তা দেখতে হবে। বিডিও ও অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকরা যত ভালো করে করবেন, তত বেশি করে আপনারা সাধারণ মানুষের আশীর্বাদ পাবেন। পুরুলিয়ায় অনেক ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব হবে। তাই আগে থেকেই পরিকাঠামো তৈরি রাখতে হবে। এখানে তো অনেকেই এসে পরিষেবা নিচ্ছেন। এমনকী ঝাড়খণ্ড থেকে এসেও বিজেপি নেতারা এখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, এবার জঙ্গলমহল কাপে ২০৭২টি ক্লাব অংশগ্রহণ করেছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাঁরা জয়ী হয়েছেন, সেই এক হাজার ১১২ জনকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে।
একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসী কুর্মি সমাজের নেতা অজিত মাহাতর সঙ্গে বৈঠক করেন। অজিতবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই আমার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন। তিনি আমাদের সমাজের অনেক দাবি আগেই মেনে নিয়েছেন। এবার যাতে সিআরআর রিপোর্ট দ্রুত পাঠানো হয়, সেই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করেছি। মুখ্যমন্ত্রী সেই রিপোর্ট দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী কুর্মি সমাজের দাবির প্রতি আন্তরিক।
এদিন বেলগুমা পুলিস লাইনের অনুষ্ঠানে জেলার একাধিক বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছাড়াও জেলাশাসক এবং পুলিস সুপার উপস্থিত ছিলেন। মানবাজারের অনুষ্ঠানে অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু এবং বান্দোয়ানের অনুষ্ঠানে বিধায়ক রাজীব লোচন সোরেন উপস্থিত ছিলেন।
পুরুলিয়ার বেলগুমা পুলিস লাইনে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। -নিজস্ব চিত্র