পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শনিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু হল টিকাকরণ। বীরভূমের সাতটি ও রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার পাঁচটি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তার রেকর্ড শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। টিকা প্রাপকের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তার জন্য ছিল র্যাপিড অ্যাকশন ও মেডিক্যাল টিম। মজুত রাখা হয় এইএফআই (অ্যাডভার্স ইভেন্ট ফলোইং ইমুনাইজেশন) কিট। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টিকাকরণ কর্মসূচি দেখতে আসেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে প্রথম টিকা দেওয়া হয় হাসপাতালের সাফাইকর্মী রবি ডোমকে। পরে এক চিকিৎসক, মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল, এমএসভিপি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা নেন। ওই সাফাইকর্মী বলেন, ভয়ের কোনও কারণ নেই। ইঞ্জেকশন নেওয়ার মতো অনুভূতি হল। টিকা নেওয়ার পর অবজার্ভেশন রুমে আধঘণ্টা বসেছিলাম। শরীরে কোনও অসুস্থতা দেখা দেয়নি।
এদিন নির্দিষ্ট সময়ে মল্লারপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ শুরু হলেও লিস্টে নাম থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ ভ্যাকসিন নিতে অনীহা প্রকাশ করেন। অনেকে গরহাজিরও ছিলেন। এদিন টিকা নিতে অনিচ্ছুকরা বলেন, টিকা নিয়ে অসুস্থ হলে তার দায় নেবে না বলছে কেন্দ্রীয় সরকার। আমাদের পরিবার রয়েছে। তাই ভয় লাগছে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন কৃষিমন্ত্রী, রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার সিএমওএইচ। তাঁরা স্বাস্থ্যকর্মীদের বোঝান। এরপর ভয় কাটাতে নিজেই টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন সিএমওএইচ। তারপর একে একে আশাকর্মীরা ভ্যাকসিন নিলেও গতি খুবই শ্লথ ছিল।
সিএমওএইচ বলেন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তারজন্য এইএফআই কিট রয়েছে। ম্যানেজমেন্টের লোকজনও আছে। যাঁরা ভ্যাকসিন দিচ্ছেন, তাঁরাও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তারপরও কর্মীদের একাংশের মধ্যে ভয়ভীতি কাজ করছে। তাই এখানে আমি নিজেই প্রথম ভ্যাকসিন নিয়ে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেছি। তারপর অনেকেই সাড়া দিয়েছেন। প্রথমদিন শ্লথ হলেও পরের দিন থেকে গতি বাড়বে। মুরারই-১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০০ জনের ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা থাকলেও নিয়েছেন ৬০ জন।
বিএমওএইচ আশিফ আহমেদ বলেন, ৪০জন টিকা নিতে রাজি হননি। তবে আশা করছি, ধীরে ধীরে তাঁদেরও ভয় কেটে যাবে।
বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার সিউড়ি হাসপাতালে টিকাকরণ কর্মসূচি দেখতে আসেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী ও পুলিস সুপার শ্যাম সিং। জেলাশাসক বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ১০০ জন করে টিকাকরণ করা হবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে অনেকেই নিয়েছেন।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন জেলাজুড়ে ১২০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। যদিও বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় ৭০০ জনের মধ্যে ৪০১ জন এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায় ৫০০জনের মধ্যে ২৫৪ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণেই অনেকে টিকা নিতে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। টিকা নিয়ে কেউ অসুস্থ হলে দায় নেবে না বলেছে কেন্দ্র সরকার। প্রাথমিক ভয়ভীতির কারণ এটাই। আতঙ্ক দূর করার প্রয়াস চালাচ্ছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। তাতে সাড়া মিলছে।