গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংগঠনের কয়েকজন নেতার অ্যাকাউন্টে সরাসরি ওই টাকা এসেছে। কয়েকটি কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট থেকেও অর্থ লেনদেন হয়েছে। সেগুলির কয়েকটি চিহ্নিত হয়েছে। লকডাউনের সময়ও বিপুল অঙ্কের টাকা আসায় দেদার খরচ করেছে সংগঠনটি। তাদেরই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ধুলিয়ান ব্লকে ওই সময়ই ছ’লক্ষ ২৭ হাজার টাকা, লালগোলা ব্লকে দু’লক্ষ ৮২ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। ডোমকলে তারা তিন লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ও জঙ্গিপুরে পাঁচ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা খরচ করেছিল। এছাড়া অন্যান্য ব্লকেও তারা প্রায় সমপরিমাণ টাকা খরচ করে। নিজেদের সংগঠন বাড়ানোর জন্যই তারা ওই কৌশল নিয়েছিল।
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে, লকডাউন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে জেলার নানা প্রান্তে টাকা ছড়িয়ে তারা সংগঠন অনেকটা মজবুত করতে পেরেছে। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের সময়ও তারা দেদার টাকা খরচ করে সংগঠিতভাবে হামলা চালিয়েছিল বলে আধিকারিকরা জানতে পেরেছে। মুর্শিদাবাদের রেজিনগর, বেলডাঙা, কৃষ্ণপুর স্টেশন ভাঙচুর করে সেই সময় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া বেশ কয়েকটি ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময় থেকেই এই সংগঠনটি গোয়েন্দাদের নজরে আসে। সম্প্রতি দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ সহ দেশের বেশ কয়েকটি হিংসাত্মক ঘটনাতেও ওই সংগঠনের নাম জড়িয়েছে। তারপর থেকেই তাদের বিপুল আয়ের উৎস সন্ধানে তদন্তে নেমেছে ইডি। প্রাথমিকভাবে তারা জানতে পেরেছে সৌদি আরব সহ বিভিন্ন দেশ থেকে এই সংগঠনের কাছে টাকা এসেছে। এছাড়াও এরাজ্যেও বেশ কয়েকজন তাদের তহবিল জোগান দেয়। তাদেরও অধিকাংশরই নাম গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
বিতর্কিত এই সংগঠনটি এরাজ্যে সবচেয়ে বেশি মজবুত রয়েছে মুর্শিদাবাদে। সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান, জঙ্গিপুর, ইসলামপুর, ডোমকল, জলঙ্গি ও দৌলতাবাদ ব্লকে তাদের সংগঠন সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী। ইডির অভিযানের পর তারা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভও দেখায়। রীতিমতো মিছিল করে তারা পথে নামে। তারা বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলায় ভোটে লড়ার পরিকল্পনাও করেছে। তবে, তারা হায়দরাবাদের সংগঠনের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে লড়বে, নাকি এককভাবে প্রার্থী দেবে তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। ইডির অভিযানের পর তারা বেশ কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে ওই সংগঠনের অর্থের উৎসের খোঁজে তল্লাশি চালানো হয়। তাদের শীর্ষ নেতার বাড়িতে অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি। মুর্শিদাবাদেরও তিনটি এলাকায় অভিযান চলে। যদিও শুক্রবার পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি ও এরাজ্যে ওই সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতার গতিবিধি অনেক আগে থেকেই আধিকারিকদের নজরে রয়েছে। অর্থের অভাব না থাকায় সংগঠনের নেতারা মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় নিজেদের প্রভাব দ্রুত বিস্তার করতে থাকে। তারা বিভিন্ন ইস্যুতে সম্প্রতি পথে নেমে ঘর গুছিয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, সংস্থার অর্থের আয়ের উৎস ইতিমধ্যেই চিহ্নিত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।