রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
মুর্শিদাবাদ নবাব এস্টেটের অধীন কারোল বিল কয়েক হাজার বর্গমাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। প্রতি বছর বর্ষার জলে ফুলেফেঁপে ওঠে ওই বিল। বিলের জল নামতেই ব্যাপক পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয় সেখানে।
পাশাপাশি বিলের কিছুটা এলাকা ও বিলের চারপাশে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়। যার ব্যতিক্রম হয়নি এবছর। এলাকার খয়রা, একডালা, সাহাপুর, মুন্সিপুর, পল্লিশ্রী, কুলুপুকুর গ্রামের চাষিরা ব্যাপকভাবে ধানচাষ করেছেন এবছর। ভালো আবহাওয়ার জন্য ধানের ফলনও ভালো হয়েছে বলে চাষিরা জানান। ইতিমধ্যে ধান কেটে ঘরে তোলার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেক চাষি ধান বিক্রি করতেও শুরু করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বা ধান কাটার মরশুম শুরু হওয়ার আগে ওই বিলে পরিযায়ী পাখির দল চলে আসে। বিশেষ করে কয়েক লক্ষ সাইবেরিয়ান পাখি এসে জড়ো হয়। থাকে শীতভর। স্থানীয় বাসিন্দা রামানন্দ বিশ্বাস বলেন, একদিকে বিলের মাছ ও অন্যদিকে মাঠের ধান থাকায় বিলে পাখির দল আসে।
এলাকার চাষিরা জানান, বিলে পাখি আসে ঠিক যখন আমন ধান কাটার সময় হয়। সমস্যা হল পাখিদের দল বিলের ধান খেয়ে প্রচুর ক্ষতি করে। রাতারাতি মাঠের কয়েক বিঘা জমির ধান খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। সেই কারণে পাখিদের অত্যাচার থেকে বাঁচতে চাষিরা বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকেন। সাহাপুর গ্রামের চাষি আপেল শেখ বলেন, পাখির অত্যাচার থেকে বাঁচতে কখনও টিন বাজিয়ে পাখি তাড়াতে হয়। আবার কখনও পটকা ফাটান চাষিরা। কোথাও আবার পাখির অত্যাচার থেকে বাঁচতে রাত পাহারার ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু এবছর চাষিদের ওই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। আমন ধান কেটে ঘরে তোলার কাজ শুরু হলেও পাখিদের দেখা মেলেনি। ফলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন চাষিরা।
স্থানীয় ভরতপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মির ফজলে হক বলেন, এখন শীত ভালোভাবে পড়েনি। তাই হয়তো পাখি আসতে দেরি করছে। কিন্তু শীত পড়লেই প্রতি বছরের মতো এবারও কয়েক লক্ষ পাখি এসে জড়ো হবে। তবে পাখির দল এখনও পর্যন্ত না আসায় চাষিদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে না।
এদিকে এখনও পাখির দেখা না মেলায় এলাকার পরিবেশপ্রেমীদের কিছুটা হলেও মনখারাপ। বাসিন্দারা জানান, পরিযায়ী পাখিদের দেখার জন্য বিলের চারপাশে শীতভর বিকেলে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। কিন্তু এবছর পাখির দেখা না মেলায় অনেকেরই মুখ ভার।