পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কাটোয়া-২ ব্লকের জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের ঘোড়ানাশ, মুস্থলি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে বহু মানুষ তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। এখানকার শিল্পীরা বিশ্ববাজারের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে দিনরাত এক করে তৈরি করছেন স্কার্ফ, খাদি মসলিন জামদানি শাড়ি। ভিনরাজ্যে না গিয়ে বাড়িতে বসেই এখানকার যুবকরা এসব তৈরি করে ভালো টাকা আয় করেন। ঘোড়ানাশের স্কার্ফের চাহিদার মূল কারণ, তাতে ভেষজ রং ব্যবহার করা হয়। রাসায়নিক রঙের ব্যবহারের বদলে চা-পাতা, গাঁদা ফুল সহ বিভিন্ন ভেসজ রং দিয়ে হাতে নকশা ফুটিয়ে তোলেন এখানকার শিল্পীরা। তবে লকডাউনের সময় এখানকার তাঁতশিল্পীদের ঘরে জমেছিল প্রচুর শাড়ি। পুজোর আগে সেভাবে বিক্রি না হওয়ায় শিল্পীরা আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। এছাড়া ট্রেন চলাচল না করায় ব্যবসায়ীরা সেভাবে শাড়ি কিনতেও আসেননি। ফলে নতুন শাড়ি বোনার ক্ষেত্রে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছিলেন তাঁতশিল্পীরা।
এবার এখানকার শিল্পীদের হাতে তৈরি হচ্ছে খাদি মসলিন জামদানি শাড়ি। যার বাজারমূল্য আকাশছোঁয়া। এতে শিল্পীরাও ভালো মজুরি পাচ্ছেন। ওই শাড়ি ফ্যাশন ডিজাইনারদের হাত ধরে পাড়ি দিচ্ছে বেঙ্গালুরু, মুম্বই, কেরল, কলকাতা প্রভৃতি দেশের বড় বড় শহরে। সেগুলি বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকায়। তার বিনিময়ে এখানকার তাঁতশিল্পীরা এক একটি শাড়িপিছু মজুরি পাচ্ছেন ২৯ থেকে ৩৬ হাজার টাকা পর্যন্ত।
এব্যাপারে কাটোয়া ও কালনা মহকুমার হ্যান্ডলুম অফিসার পলাশ পাল বলেন, আমরা জানি ওখানকার তাঁতিরা জামদানি বুনছেন। ওইসব শাড়ি বোনার ক্ষেত্রে কাঁচামাল জোগাড় করতে হয়তো খুব একটা খরচ পড়ছে না। একটি শাড়ি বুনতে তাঁতশিল্পীদের সময় লাগছে প্রায় তিন মাস। হাতের কাজের জন্যই শাড়ির দাম বাড়ে। মাটি উৎসবে ওইসব শাড়ির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছিলাম। ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার জামদানি শাড়ি প্রায়ই তৈরি হয়। কাটোয়া ও ঘোড়ানাশ এলাকায় কিছু তাঁতশিল্পী বংশ পরম্পরায় এইসব জামদানি শাড়ি বোনেন। ঘোড়ানাশ গ্রামের তাঁতশিল্পীদের একাংশ জানান, খাদির মসলিন সুতোর শাড়ির উপর জড়ি, রেশম সিল্ক প্রভৃতির নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়। সম্পূর্ণ হাতে তৈরি করা হয়। গোটা শাড়িজুড়ে অসংখ্য সূক্ষ কারুকার্য করা থাকছে। ঘোড়ানাশ গ্রামের তাঁতি জগদীশ দে, গণেশ হাজরা বলেন, আমরা এইসব মূল্যের একটি জামদানি শাড়ি তৈরি করে ১৫ থেকে ৩৬ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি পাচ্ছি। বরাতও এসেছে অনেক। যাঁদের হাত ধরে এইসব শাড়ি বিভিন্ন শহরে পাড়ি দিচ্ছে সেই শিল্পীরা বলেন, আমাদের কাছ থেকে ফ্যাশন ডিজাইনাররা কিনে নিয়ে যান। তারপর তাঁরা ওইসব শাড়ির দাম দেড় থেকে আড়াই লক্ষ টাকা নেন। জানা গিয়েছে, এখানকার শাড়ি অত্যন্ত মোলায়েম। রাজ্যে এই শাড়ির ভালো চাহিদা রয়েছে। বিশ্ববাজারে চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে দিনরাত এক করে শিল্পীরা স্কার্ফ, জামদানি শাড়ি তৈরি করছেন।