গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কাঁসার কাজে যুক্ত শিল্পীদের নিয়ে গঠিত সমবায়ের সম্পাদক কালাচাঁদ চন্দ বলেন, মহাজনি প্রথায় কাজ চালিয়ে যাওয়া শিল্পীদের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছিল। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো করোনা এসে হাজির হয়েছে। কাজ লাটে ওঠায় শিল্পী পরিবারগুলি চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে। এই অবস্থায় প্রশাসনের উদ্যোগে ক্লাস্টার তৈরি হলে শিল্পীরা কিছুটা উপকৃত হবেন।
বাঁকুড়ার জেলা শিল্প আধিকারিক সমীরকুমার পাণ্ডা বলেন, ধুঁকতে থাকা কেঞ্জাকুড়ার কাঁসা শিল্পীদের আবেদনের ভিত্তিতে একটি ক্লাস্টার কাম ফেসিলিটি সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। জেলা পরিষদের মাধ্যমে সেন্টারটি নির্মাণের জন্য ডিপিআর তৈরির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, কালীপুজোর পরই ডিপিআর চূড়ান্ত করে নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে।
একটা সময় বাঁকুড়ার সব থেকে বর্ধিষ্ণু গ্রাম হিসেবে কেঞ্জাকুড়ার নামডাক ছিল। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই কাঁসা ও পিতলের বাসন তৈরির কাজ চলত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কাঁসার জায়গা দখল করেছে স্টিলের বাসনপত্র। তার জন্য বহু পরিবারই তাদের পুরনো পেশাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে এখনও গ্রামের প্রায় ৩৫০টি পরিবার কাঁসার বাসনপত্র তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এখানকার তৈরি কাঁসার জিনিসপত্র বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। কলকাতা ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় মহাজনের মাধ্যমে তা বিক্রি হয়।
গ্রামের বাসিন্দা বাহাদুর চন্দ বলেন, বাবার কাছ থেকে কাজ শিখে এখনও পর্যন্ত বাসন তৈরির কাজ করি। মহাজন আমাদের বাসন তৈরির সামগ্রী সরবরাহ করেন। আমরা আগুনে গলিয়ে অর্ডার অনুযায়ী জিনিস তৈরি করি। পরে তা মহাজনের হাতেই তুলে দিই। এজন্য মহাজনরা আমাদের কাজের ধরণ অনুযায়ী কেজি প্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দেয়। ফলে কষ্ট করে জিনিস তৈরি করলেও তার মুনাফা আমাদের কাছে আসে না। আমরা পাই বরাদ্দ মজুরিটুকুই। তাই আমরা চাই, মহাজনি প্রথা বন্ধ হোক। সরকার ক্লাস্টারের মাধ্যমে আমাদের কাঁচামাল সরবরাহ ও উৎপাদিত জিনিস বিপণনের ব্যবস্থা করুক। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই এই দাবি জানিয়ে আসছিলাম। সেই মতো প্রশাসন ক্লাস্টার তৈরির জন্য জায়গা চিহ্নিত করেছে। আমরা চাই, এবার দ্রুত ক্লাস্টার তৈরির কাজ শেষ করা হোক।