সংবাদদাতা, রানাঘাট: করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও রাস উৎসবে মেতে উঠল শান্তিপুর শহর। সোমবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই রাসের মণ্ডপ দেখতে অনেকেই রাস্তায় বের হন। শান্তিপুর স্টেশনে সকাল থেকে বেশকিছু ট্রেন এসে পৌঁছনোর পর বহু দর্শনার্থীকে নামতে দেখা গিয়েছে। এবার শান্তিপুর স্টেশন থেকে বড় রাস্তা বরাবর বেশকিছু বড় রাসের মণ্ডপ হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন থিমের প্যান্ডেল, কোথাও করোনা নিয়ে সচেতনতার বার্তা, কোথাও আবার পটচিত্র, দর্শনীয় স্থান, মন্দিরের আদলে মণ্ডপ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাসের শোভাযাত্রা বন্ধ এবং খোলামেলা মণ্ডপ তৈরির নির্দেশ থাকায় আলোকসজ্জার উপর জোর দিয়েছে অনেক উদ্যোক্তা। আবার করোনা আবহে বাজেট কমাতে গিয়ে অনেক প্রতিমার উচ্চতাও ছোট করা হয়েছে। বাজেটের বেশ কিছুটা অর্থ বেশিরভাগ রাস উদ্যোক্তা বস্ত্র বিতরণ সহ নানা সামাজিক কাজে ব্যয় করচ্ছেন। বারোয়ারি পুজোগুলি ছোট হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অনেক বিগ্রহ বাড়ি বিগ্রহকে এবছর অতিমারীর কারণে রাসমঞ্চে আনছেন না। রাস উৎসব উপলক্ষে এবছর মেলাও বসছে না শান্তিপুর শহরে। তবে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় অল্পকিছু ছোটদের খেলনা, মনোহারী সামগ্রী, খাবারের দোকান বসতে দেখা গিয়েছে। উৎসব ঘিরে রবিবার রাত থেকেই পুলিসের নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। শহরজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় টহল চলছে। যাবতীয় বিধি মেনে যাতে উৎসব পালন করা যায় তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিস এবং পুরসভা।
শান্তিপুর থানার মোড় এলাকার রাস উৎসব পুজো কমিটির মণ্ডপের থিম করা হয়েছে করোনা। সেখানে করোনার প্রকোপ শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত লকডাউন, মানুষের দুরাবস্থা, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা সহ ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা ও পরিস্থিতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শান্তিপুরের ভগবতী দাস রোডের যুবকবৃন্দ তাঁদের ৫৮তম বর্ষের উৎসবে মাটি দিয়ে তৈরি করেছেন শহরের তিনটি দর্শনীয় স্থান। শ্রীচৈতন্যদেবের শিক্ষাগুরু অদ্বৈত আচার্যের শিক্ষা কেন্দ্র অদ্বৈত পাঠ, কয়েকটি পুরাতন শিবমন্দিরের মধ্যে অন্যতম জলেশ্বর শিবমন্দির এবং রাসের প্রবর্তক বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর আদি বাড়ি অর্থাৎ বড় গোস্বামী বাড়ির মন্দির। এই তিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান মাটির সাহায্যে এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পাশাপাশি শান্তিপুরের শ্যামবাজারের ৮৫তম বর্ষের রাসে তাঁদের মূল আকর্ষণ পটচিত্র। সেখানে পটচিত্রের মাধ্যমেই মণ্ডপ সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এদিন শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য শহরের দু’টি বিগ্রহ বাড়ি মদন গোপাল এবং পাগলা গোস্বামী বাড়ির তোরণের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি তিনি প্রায় ৫০০জন দুঃস্থ মানুষকে কম্বল বিতরণ করেন।