কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
সিবিআই তদন্ত যত এগচ্ছে, ‘লালা’র হাত কত লম্বা তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। সেই হাতের দৈর্ঘ যেন বেড়েই চলেছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে বিভিন্ন অফিসারদের সরাসরি সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে অবৈধ কয়লা সিন্ডিকেটে। কিন্তু হাজার হাজার টন অবৈধ কয়লা সরবরাহ হতো কোথায়? সেই সূত্র ধরেই উঠে আসছে অবৈধ কয়লার ক্রেতা হিসেবে বিভিন্ন বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম। আসানসোল, দুর্গাপুর, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ সহ রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পতালুকেই যে অবৈধ সিন্ডিকেটের কয়লা সরবরাহ হতো তাও বেরিয়ে আসছে। এই সূত্র ধরেই কয়লা পাচার কাণ্ডের মাথাদের সঙ্গে বহু নামী ব্যবসায়ীর সংযোগ নিয়ে শিল্পাঞ্চল জুড়ে চর্চা চলছে। জামুড়িয়া থানা এলাকায় রয়েছে বহু স্পঞ্জ আয়রন, সিমেন্ট কারখানা থেকে নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে বহু কারখানাই সরাসরি এই অবৈধ কয়লা কিনে নিত বলে অভিযোগ।
মূলত দুটি কারণে সিন্ডিকেটের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিল অসাধু ব্যবসায়ীরা। প্রথমত, ইসিএল থেকে ডিওর (ডেলিভারি অর্ডার) মাধ্যমে কয়লা কিনতে গেলে অনেক বেশি দাম পড়ে। তাই বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সস্তায় কয়লা নিয়ে কাজ চালাত তারা। কিন্তু অবৈধ কয়লা ব্যবসাও ‘সেন্ট্রালাইজ’ হয়ে যাওয়ায় লোকাল মাফিয়াদের থেকে কয়লা কেনার সুযোগ ছিল না। তাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই ‘প্যাডপার্টি’দের কড়া নজরদারিতে অবৈধ কয়লা প্রকাশ্যে আসত কারখানায়। অবৈধ কয়লার রেটও ওঠানামা করে ইসিএলের কয়লার দরের ওঠানামার উপর। ইসিএলের কয়লা থেকে গড়ে টন প্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা সস্তায় সিন্ডিকেটের কাছ থেকে কয়লা পেত বিভিন্ন কারখানা। কিন্তু কারখানা চালাতে গেলে যেমন উৎপাদনের হিসেব রাখতে হয়, তেমনই কাঁচামালেও তথ্য রাখতে হয়। সেই আইন বাঁচাতে প্রয়োজনের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কয়লা বৈধভাবে সংগ্রহ করা হতো। বাকিটা হতো ঘুরপথেই। এভাবে অসৎ উপায়ে বিপুল মুনাফা করেছে কারখানাগুলি। এমনকী অবৈধ কয়লা নিতে বহু কারখানা এতটাই বেপরোয়া ছিল যে, যখন সিবিআই এনিয়ে তদন্ত শুরু করে, তখন ডিপো থেকে অতিরিক্ত কয়লা বহু কারখানা নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয়।
অসাধু ব্যবসায়ীদের ঘনিষ্ট মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ীদের ধারণা ছিল, এক-দু’দিন এনিয়ে নাড়াচাড়ার পর সব ঠান্ডা হয়ে যাবে। কিন্তু এনিয়ে যেভাবে সরকারি আধিকারিক থেকে সব প্রতিষ্ঠানকে একে একে র্যাডারে নিচ্ছে সিবিআই, তাতে তাদের বাঁচাও কঠিন। তারা ভালো করেই জানে, উৎপাদনের সঙ্গে কাঁচা মালের হিসেব মিলিয়ে দেখলেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়বে।