পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, খাবারের আলুর দাম যেহেতু বেড়ে গিয়েছে, সেকারণে স্বাভাবিক বীজেরও দাম বেড়েছে। তা সত্ত্বেও চাষিরা আলু চাষে নেমেছেন। যদিও অন্যবছরের তুলনায় বীজের দাম এবছর বেশি থাকায় আলু চাষের এলাকা কিছুটা কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আধিকারিকরা। বীরভূমের কৃষিদপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর একেএম মিনাজুর আহাসান বলেন, ভিনরাজ্যের উপর ভরসা না করে পশ্চিমবঙ্গেই যাতে উন্নতমানের বীজ তৈরি করা হয় সেব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে ইলামবাজারের একটি ফার্মে পরীক্ষামূলকভাবে আলুবীজ উৎপাদনের কাজ চলছে।
চলতি বছরে আলুবীজের দাম প্রচণ্ড হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা পৌঁছে গিয়েছে প্রতি প্যাকেট ৬০০০ টাকায়। এক বিঘা জমিতে চার প্যাকেটেরও বেশি আলুবীজ প্রয়োজন। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সারের দামও। যার ফলে আলু চাষের ক্ষেত্রে তীব্র সমস্যার মধ্যে পড়ছেন বোলপুর মহকুমার প্রগতিশীল চাষিরা। অন্যান্য বছর এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে যা খরচ হয়, এবছর তা দ্বিগুণের থেকেও বেশি হয়ে গিয়েছে। ভালো ফলনের জন্য আলুবীজ ছাড়াও রাসায়নিক সার, সেচ ব্যবস্থা, কীটনাশক স্প্রে সহ আনুষঙ্গিক সবকিছু নিয়ে এক বিঘা জমিতে খরচ পড়ছে প্রায় ৩৮-৪০ হাজার টাকা। তার ফলে চাষিদের কাছে আলু চাষ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ চাষিকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা চড়া সুদে মহাজনদের কাছ থেকে নিতে হচ্ছে। সরকার থেকে চাষিদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তা থেকে ঋণ পেতে অনেকটা সময় লাগছে বলে দাবি আলুচাষিদের। তাই নিজের খরচেই আলু চাষ শুরু করলেও তা সম্পূর্ণ করা যাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে চাষিদের। অন্যদিকে, খোলা বাজারেও চাহিদা অনুযায়ী জোগান না থাকায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫০ টাকা দরে। যা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। চাষিদের দাবি, আলুবীজের দাম আকাশছোঁয়া হলেও ফলনের পর কুইন্টাল প্রতি আলুর দাম খুব বেশি পাওয়া যাবে না। তার ফলে চাষিদের লোকসান অনিবার্য। এই পরিস্থিতিতে তীব্র খরচের আশঙ্কায় অনেক চাষি আলু ছেড়ে অন্য মরশুমি ফসল চাষের কথা চিন্তা-ভাবনা করছেন। শীতের মরশুমে বিভিন্ন শাক-সব্জি চাষ করে লাভের মুখ দেখতে চাইছেন তাঁরা।
বোলপুর থানার মধ্যক্ষরা গ্রামের চাষি ক্ষিতীশ বিশ্বাস, ধানু হাজরা ও গণেশ বিশ্বাস বলেন, এত খরচের পর চাষ করে যদি আবহাওয়া প্রতিকূল থাকে তবে এক বিঘা জমিতে ৩৫-৪০ কুইন্টাল পর্যন্ত আলুর ফলন হতে পারে। কিন্তু, সেক্ষেত্রে বাজারে চাহিদা কমে যেতে পারে। তাতে আমাদের লোকসান অবশ্যম্ভাবী। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
বোলপুরের গ্রামে আলু চাষ করতে ব্যস্ত এক কৃষক। - নিজস্ব চিত্র