বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
তারাপীঠ মন্দিরকে কেন্দ্র করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কয়েকহাজার মানুষের পেট চলে। এর মধ্যে অন্যতম হল অটো ও ট্রেকার চালকরা। রামপুরহাট স্টেশনে রেলপথে নামা পুণ্যার্থীদের চাপিয়ে তাঁরা তারাপীঠে পৌঁছে দেন। এর উপরও নির্ভর করে সংসার, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে আসছেন প্রায় পাঁচশোর বেশি চালক। লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় খাঁ খাঁ স্টেশন চত্বরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে যানবাহনগুলিকে। আনলক পর্বে মন্দির খুললেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় যাত্রীর অভাবে তাঁদের ব্যবসা মার খেয়েছে। একইভাবে পর্যটকদের আনাগোনা না থাকায় সমস্যায় পড়েন তারাপীঠের লজ ও হোটেল ব্যবসায়ী। ফলে, সকলেই ট্রেন কবে চালু হচ্ছে সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন। দূরপাল্লার কয়েকটি এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হলেও তারাপীঠে আসার যাত্রীর সংখ্যা ছিল কম। অবশেষে আগামী বুধবার থেকে এই শাখায় কিছু লোকাল ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেছে রেল।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান-রামপুরহাট শাখায় আটটি, রামপুরহাট- গোমানি শাখায় আটটি, রামপুরহাট-দুমকা ও জসিডি শাখায় দু’টি, আজিমগঞ্জ-রামপুরহাট শাখায় চারটি সহ আরও কয়েকটি শাখায় লোকাল ট্রেন চলবে। আর এতেই আশায় বুক বাঁধছে তারাপীঠ পর্যটন কেন্দ্র। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, লোকাল ট্রেন চালু হওয়া অত্যন্ত খুশির খবর। যাঁরা এতদিন ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক সঙ্গতির কারণে মায়ের দর্শনে আসতে পারেননি, তাঁরা এবার আসবেন। তিনি আরও বলেন, ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় এই তীর্থক্ষেত্রে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে। পুজোর উপকরণ বিক্রেতা থেকে হোটেল ও লজ ব্যবসায়ীরাও আশার আলো দেখবেন। আরও ভালো হয় যদি ইন্টারসিটি, শহিদ, মাতারা ও গণদেবতা এক্সপ্রেস চালু হয়। তাহলে পর্যটন কেন্দ্রের অর্থনীতি কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াবে।
লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার খবরে খুশি রামপুরহাট স্টেশন চত্বরে থাকা অটো ও ট্রেকার চালকরা। জাহাঙ্গির শেখ, বাপ্পা শেখ, নির্মল দাসরা এদিন থেকেই যানবাহনগুলি পরিষ্কার ও চালিয়ে দেখে নিচ্ছেন যন্ত্রাংশ ঠিকঠাক আছে কি না। তাঁরা বলেন, এই যানবাহনের উপর নির্ভর করে আমাদের সংসার, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা সবই চলে। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিলাম। ব্যাঙ্কের কিস্তি দূরঅস্ত, দু’বেলা ঠিকমতো খাবারও জোটেনি। বহুদিন পর রেল পরিষেবা স্বাভাবিক হচ্ছে। আশা করি, আগের মতোই সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে।
তবে, হকাররা এখনই পুরো মাত্রায় ট্রেনে উঠতে পারবেন কি না তা এখনও পরিষ্কার হয়নি। জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, যাঁরা অনুমোদনপ্রাপ্ত ভেন্ডার তাঁরা থাকবেন। অনুমোদনহীন হকারদের ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। রামপুরহাট জংশনের প্ল্যাটফর্ম পরিস্কার করছেন এক রেলকর্মী। - নিজস্ব চিত্র