রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুমন্ত পাল বলেন, ওই তিনটি গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ বালাপোশ তৈরির পেশার সঙ্গে যুক্ত। ওঁদের কথা ভেবে ওই এলাকায় একটি বালাপোশ তৈরি প্রশিক্ষণ, উৎপাদন ও বিপণন কেন্দ্রের হাব তৈরির চিন্তাভাবনা চলছে।
পুকুরপাড়ার হেমলতা বিশ্বাস, অঞ্জলি রায়, অধীর দাসরা জানান, খান দু’য়েক পুরনো শাড়ি আর কেজি পাঁচেক ছাঁট উল, এই দু’টি জিনিসই বালাপোশের প্রধান সামগ্রী। পুরনো শাড়ির পাড়ের অংশ বাদ দিয়ে খোল বানানো হয়। এরপর খোলের মধ্যে ভরা হয় ছাঁট উল। তারপর সেটিকে শাড়ির সঙ্গে মানানসই রঙের একটু মোটা সুতো দিয়ে সেলাই করা হয়। যাতে ব্যবহার করার সময় ভিতরের ছাঁট উল সরে না যায়। তাঁরা বলেন, রামপুরহাট, মল্লারপুর, নলহাটি, কুলি, কান্দি, বহরমপুর, জলঙ্গি, লাভপুর, কীর্ণাহার, সিউড়ি, মহম্মদবাজার, প্যাটেলনগর, শ্যাওড়াকুড়ি, রানিশ্বর, এমনকী ঝাড়খণ্ডে আসনবনি, কুমাড্ডা প্রভৃতি জায়গার বিভিন্ন বাড়ি থেকে সারাবছর ধরেই পুরাতন শাড়ি কিনে নিয়ে আসি। তারপর কেজি পাঁচেক ছাঁট উল দিয়ে বালাপোশ তৈরি হয়। বিক্রি হয় প্রতি পিস ৩০০-৩৫০ টাকায়। তবে, অনেকের কাছে মহাজনরাই বালাপোশ তৈরির সামগ্রী দিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বালাপোশ প্রতি মজুরি মেলে ৬০ টাকা।
জানা গিয়েছে, কয়েকবছর আগে অবশ্য গ্রাম তিনটির চিত্রটা এরকম ছিল না। আজ যাঁরা বালাপোশ তৈরি করে স্বনির্ভর হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই দিনমজুরের কাজ করতেন। কেউ অন্যের তাঁতে তাঁত বুনতেন, কেউ সব্জিও বিক্রি করতেন। আজকে তাঁরা এই কাজ করে দৈনিক গড়ে ১৫০-২০০ টাকার কাছাকাছি উপার্জন করছেন।
গ্রামবাসী বাবু মিস্ত্রি, বিকাশ লেটরা বলেন, আগে বর্ধমানের জৌগ্রাম, শক্তিগড় সহ একাধিক এলাকার লোক এই গ্রামগুলিতে বালাপোশ বিক্রি করতে আসতেন। তাঁদের কাছ থেকে বালাপোশ তৈরির পদ্ধতি জেনে নিয়ে আমরাও বানাতে শুরু করি। দেখাদেখি প্রতিবেশীরাও তা বানাতে থাকেন।
এই পেশার সঙ্গে যুক্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তাপসী মণ্ডল হাওলাদার। তিনি বলেন, গ্রামের অনেকেই যখন বালাপোশ তৈরির দিকে ঝুঁকছে তখন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখন অনেকেই সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে বালাপোশ তৈরি করেই তাঁদের আর্থিক সংস্থানের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা বলেন, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জেরে দিনমজুরের কাজ সেভাবে জুটছে না। তাই প্রতিনিয়ত এই পেশার সঙ্গে নতুন নতুন মানুষ যুক্ত হচ্ছেন। এখনকার বাজারে একটা ভালো লেপ করতে গেলে প্রায় কমপক্ষে ১০০০ টাকার ধাক্কা। ওই টাকায় তো আমাদের কাছে তিনটে বালাপোশ তৈরি হয়ে যাবে। ফলে, চাহিদাও ভালো রয়েছে। নিজস্ব চিত্র