রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
কয়েক দশক ধরেই মোমের মূর্তি গড়ার জন্য খ্যাতি পেয়েছেন আসানসোলের মহিশীলার সুশান্ত রায়। মোমের মূর্তি তৈরি করতে যথেষ্ট সময়ও লাগে। সুশান্তবাবু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর মূর্তিও বানিয়েছিলেন। তা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। সেই থেকেই শিল্পীর সঙ্গে তাঁর পরিচয়। ক্রীড়াপ্রেমী সুভাষবাবু কলকাতায় মারাদোনাকে আনার ব্যাপারে সচেষ্ট ছিলেন। বহু বছরের চেষ্টার পর শিকে ছিঁড়েছিল ২০০৮ সালে। সেবার নভেম্বর মাসের মাঝে নিশ্চিত হয় যে, ড্রিবলিংয়ের যাদুকর আসছেন ভারতীয় ফুটবলের ‘মক্কা’ কলকাতায়। বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা আইকনকে চমকপ্রদ উপহার দেওয়ার জন্য মনে পড়ে আসানসোলের সুশান্তবাবুর কথা। মন্ত্রীর ফোন পাওয়ার পরের দিনই কলকাতা গিয়ে মহাতারকারা ছবি, উচ্চতা, কোমরের মাপ থেকে রিস্টের মাপ সব নিয়ে এলেন বাড়িতে। এরপর শুরু হয় অসাধ্য সাধনের কাজ। এত অল্প সময়ে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফুটবলারের মূর্তি তৈরি তো আর চাট্টিখানি কথা নয়। দিন রাত এক করে কাজ করে মাত্র ১৫ দিনের মাথায় শেষ হল কাজ। কথা রাখতে পেরে স্বস্তি পান শিল্পী।
সেদিন মারাদোনার আগমনে উপচে পড়েছিল যুবভারতী। ভিড় সামাল দিতে না পারে ঘটে নানা বিশৃঙ্খলাও। বহু ঝক্কি পেরিয়ে অবশেষে শিল্পী তার অনন্য সৃষ্টি তুলে দিয়েছিলেন মারাদোনার কাছে। মুগ্ধ হয়েছিলেন আর্জেন্টিনীয় মহাতারকা। মোমের মূর্তিকে জড়িয়ে ধরা থেকে হ্যান্ডসেক সবই করেছিলেন তিনি। মোমের মূর্তির পায়ে থাকা আসল বল নিয়ে পায়ের ভেলকি দেখান ফুটবলের ম্যাজিশিয়ান। খেলার মাঠে যে হাত ‘হ্যান্ড অব গড’ বলে পরিচিত, সেই হাতের স্পর্শও পান সুশান্তবাবু। মারাদোনার মৃত্যুতে সেই স্মৃতিই যেন বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে শিল্পীর। সেই সময় ঠিক হয়েছিল, তাঁর মোমের মূর্তি মারাদোনার কাছে স্থায়ীভাবে রাখার জন্য আর্জেন্টিনা পাঠানো হবে। কোনও কারণে অবশ্য তা হয়ে ওঠেনি। সেই আক্ষেপও এদিন শোনা যায় শিল্পীর গলায়। তবে ওই মূর্তি অবশ্য সম্মানের সঙ্গে ঠাঁই পেয়েছে কলকাতার ওয়াক্স মিউজিয়ামে। মারাদোনার পায়ের স্পর্শ থাকা বলটি আজও নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন সুশান্তবাবু। ওই বলই মারাদোনার স্মৃতি হিসেবে থেকে যাবে খনি শহর আসানসোলে।