বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
এদিন দুপুর ১টা ৫মিনিট নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী শুনুকপাহাড়ির মঞ্চে হাজির হন। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগেই শুনুকপাহাড়ি হাটতলার মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। রাস্তাতেও জনজোয়ার বইতে থাকে।
আদিবাসীদের বিপুল উপস্থিতি মুখ্যমন্ত্রীকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। জনসমাগম দেখে খুশি মমতা বলেন, অনেকেই এখনও আসতে পারেনি। কয়েকশো বাস এখনও রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। যে সমস্ত কর্মী সমর্থক এসেছেন তাঁদের বলব, বাঁকুড়া আমার কাছে নতুন নয়। কিন্তু, আপনারা কি সেদিনের লড়াইয়ের কথা ভুলে গিয়েছেন? দশ বছর আগে একটা ছোট ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। তার জন্য কোতুলপুরের বিক্রমপুর গ্রামের সালামের বাড়িতে কী ঘটনা ঘটেছিল ভুলে গিয়েছেন? তারা দুই ভাই আর্মিতে কাজ করত। মায়ের সামনে দুই ছেলের মুণ্ডু কেটে ফেলে দিয়েছিল। মা ছেলেদের একফোঁটা জল পর্যন্ত দিতে পারেনি। আমি ভুলিনি, বাঁকুড়ার গোপীনাথপুর, সিহড়, সারেঙ্গা, রাইপুর, তালডাংরায় সিপিএমের সেই অত্যাচার। আপনারা কি ভুলে গিয়েছেন? এত তাড়াতাড়ি ভুললে চলবে না। আজ বাঁকুড়ার কোতুলপুর থেকে খাতড়া, ওন্দা, ইন্দাস শান্তিতে আছে। সেটা সিপিএমের হার্মাদদের সহ্য হচ্ছে না। ওরাই এখন রং বদলে বিজেপির হার্মাদ হয়েছে।
জঙ্গলমহলের আদিবাসী মানুষদের উদ্দেশে মমতা বলেন, করোনার সময় আপনাদের বাড়িতে বিজেপির কোনও নেতা গিয়েছেন? যাননি তো? আমরা গিয়েছি। শুধু তাই নয়, রেশনে চালের ব্যবস্থা করেছি। বুঝতে পারছেন তো কে পাশে আছে। তাই সুখে শান্তিতে থাকতে ও সরকারি সমস্ত সুবিধা পেতে আগামী নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশেই থাকুন। আমি কথা দিচ্ছি, জুন মাস পর্যন্ত রেশনে চাল তো দেবই, পরবর্তী সময়েও এই ব্যবস্থা চলবে। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বাঁকুড়ার মানুষের জন্য জল প্রকল্প, আইটিআই কলেজ, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সহ উল্লেখযোগ্য যে সমস্ত কাজ করেছেন তার খতিয়ান তুলে ধরেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য এদিন সকাল ৯টা থেকেই শুনুকপাহাড়ি মাঠে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকেই বাঁকুড়া-খাতড়া রাস্তায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের গাড়ির লাইন পড়ে যায়। সভাস্থল থেকে প্রায় চার কিমি দূর পর্যন্ত সেই লাইন ছিল। যা সামাল দিতে হিমশিম পুলিস প্রশাসনকে খেতে হয়।
খাতড়া থেকে এদিনের সভায় হাজির হয়েছিলেন বুদ্ধদেব মুর্মু ও শুকদেব মুর্মু। মাঠের কাজ ছেড়ে সভায় কেন? বুদ্ধদেববাবু বলেন, দিদি আমাদের ভাতা দিচ্ছেন। বিনা পয়সায় রেশন দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরেছে। ওঁকে দেখতেই আমরা এই সভায় এসেছি। তিনি আমাদের জন্য যা করেছেন, কোনও সরকারই তা করেনি। তাই আমরা তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিতে এসেছি। মুখ্যমন্ত্রীও এদিনের ভিড় দেখে বুঝেছেন, জঙ্গলমহল তাঁর পাশ থেকে সরে যায়নি।