বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার পর্যন্ত বীরভূমের আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। শীতের আমেজ তো দূরের কথা, আবহাওয়া ছিল কিছুটা উষ্ণ। ওইদিন জেলায় তাপমাত্রা ছিল ১৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এক ধাক্কায় তা রবিবার নেমে যায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সোমবার আরও কিছুটা নেমে হয়েছে ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
শ্রীনিকেতন আবহাওয়া অফিসের ইন-চার্জ বিষ্ণুপ্রসাদ কোনাই বলেন, রবিবারের তুলনায় এদিন আরও ৩ ডিগ্রি কমেছে। আগামী তিন-চারদিন এরকমই পারদ থাকবে। তার নীচে নামবে না। কিছুদিন পর ফের তাপমাত্রার পারদ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এবার দুর্গাপুজো কিছুটা দেরিতে হয়েছিল। ফলে সব পুজোই পিছিয়ে যায়। কালীপুজোর সময় থেকেই শীত অনুভূত হচ্ছে। তখন থেকে হালকা হাওয়াও বইতে শুরু করে। কিন্তু গত দু’দিন ধরে শীতের কামড়ে কার্যত জেলাবাসী কাবু হয়ে গিয়েছেন। গত সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় তাপমাত্রার পারদ ১৭-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল। কিন্তু রবিবার হঠাৎ করে পারদ নেমে যাওয়ায় বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা কার্যত পাল্টে গিয়েছে। দিনেরবেলায় সেভাবে গরম পোশাক না পরলেও রবিবার রাতে জেলা সদর সিউড়ি শহরের রাস্তায় লোকজন কম দেখা গিয়েছে। এছাড়া ওই রাতে অনেককে আগুন পোহাতেও দেখা যায়। তাছাড়া প্রবল শীত অনুভূত হতে থাকায় গৃহস্থের বাড়িতে লেপ, কম্বলের ব্যবহার পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। এমনকী, অনেকেই এই সময় লেপ তৈরিও করাচ্ছেন।
সিউড়ির এক লেপ তৈরির কারিগর বলেন, এবার অনেকদিন শীত থাকবে বলে মনে হচ্ছে। তাই গত কয়েকদিন ধরে লেপ তৈরির ভালো বরাত পাওয়া গিয়েছে। অনেকের বাড়িতে গিয়ে তুলো দিয়ে সেই লেপ তৈরি করছি।
বীরভূম পর্যটনের জেলা বলেই পরিচিত। তাই শীতের আমেজ নিতে ইতিমধ্যে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির জেরে এখনও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। তার জেরে যাতায়াতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ পর্যটকই নিজস্ব গাড়ি নিয়ে আসছেন। তবে এভাবে ঠান্ডা থাকলে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস ছিল নিম্নচাপের মেঘ কাটলে জাঁকিয়ে শীত পড়বে। স্বাভাবিকভাবেই জেলায় শীত পড়েছে। তারসঙ্গে উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তবে আগামী কয়েকদিন পর ফের এই ধরনের শীতের কামড় কিছুটা কমে যেতে পারে। নভেম্বরের শেষে স্থায়ীভাবে শীত অনুভূত হতে পারে। তবে, শীত পড়তেই জেলায় বাড়ছে নলেন গুড়ের মিষ্টির চাহিদা। সিউড়ি, বোলপুর, রামপুরহাট প্রভৃতি শহরের দোকানে নলেন গুড়ের হরেক মিষ্টির পসরা সাজিয়ে বসছেন দোকানিরা। তারসঙ্গে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গুড় তৈরির কারিগররাও জেলায় এসে তাঁদের কাজ শুরু করেছেন।
বোলপুরের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী উদয়শঙ্কর মোদক বলেন, কালীপুজোর সময় থেকেই নলেন গুড়ের মিষ্টি তৈরির কাজ শুরু হয়। এখন শীত পড়তে ওই মিষ্টির চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। তাই নলেন গুড়ের সন্দেশ, রসগোল্লা প্রভৃতি মিষ্টি আরও বেশি করে তৈরি করা হচ্ছে।