বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঢোকার মুখে জাতীয় সড়কের অনেকটা অংশ চলে গিয়েছে টোটো, যন্ত্রচালিত ভ্যান ও অন্যান্য যানবাহনের দখলে। জায়গাটি অলিখিত স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে বৈধ-অবৈধ সবরকমের যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকছে। সরু হয়ে যাওয়া সেই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গগামী হাজার হাজার পণ্য বোঝাই লরি, যাত্রীবোঝাই বাস। ফলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাসপাতালের সামনে তীব্র যানজট লেগেই রয়েছে। এরই মধ্যে প্রাণ হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয় রোগীর আত্মীয়দের। একাধিকবার তা নিয়ে পুলিস প্রশাসনে জানানো হয়েছিল বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। গত ১৫ অক্টোবর লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যুর পর রাস্তার দু’ধার যানবাহনের অবৈধ দখল মুক্ত করার দাবি তুলেছিলেন এলাকার মানুষ। পুলিস আশ্বাসও দিয়েছিল। কিন্তু ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও সেই আশ্বাসের বাস্তব রূপ দেখা যাচ্ছে না। স্বভাবতই পুলিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, এর পরে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে অবরোধ করে যানবাহন চলাচল স্তব্ধ করে দেবেন তাঁরা।
স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, গেটের সামনে টোটোগুলি যেভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, তাতে অ্যাম্বুলেন্সের ঢুকতে বেরতে সমস্যা হয়। রোগী ভর্তি যানবাহন যানের জটে আটকে পড়ছে। এখনই বিকল্প না ভাবলে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠবে।
স্থানীয়রা বলছেন, এর আগেও ঘিঞ্জি সড়কে চলাচল করতে গিয়ে চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, রোগীর আত্মীয় অনেকেই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে অবরোধ, ঘাতক লরিতে অগ্নিসংযোগ করেছেন। কিন্তু সড়ক দখলমুক্ত করতে পুলিসকে ধারাবাহিক কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। দুর্ঘটনার পর একজন সিভিক মোতায়েন করা হলেও তাঁকে তৎপর হতে দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে দখলকারী যানবাহন চালকদের বক্তব্য, তাঁদের রোগী নিয়ে যাওয়া আসা করতে হয়। নির্দিষ্ট কোনও পার্কিং না থাকায় জাতীয় সড়কের ধারেই যানবাহন দাঁড় করিয়ে রাখতে হচ্ছে। প্রশাসন বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করে দিলে আমরা সেখানে সরে যাব।
এব্যাপারে মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি ডাঃ পলাশ দাস বলেন, মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল সহ অন্যান্য বিল্ডিং নির্মাণ হওয়ায় ক্যাম্পাস ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। সেখানে টোটো সহ এত যানবাহনের পাকিংয়ের ব্যবস্থা তো করা যাবে না। অথচ রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের প্রয়োজন। এটাকে ব্যালান্স করে কী করা যায়, তা নিয়ে আগামী ৩ নভেম্বর রোগী কল্যাণ সমিতির মিটিং রয়েছে। দেখা যাক আলোচনার মাধ্যমে কী উঠে আসে।
অন্যদিকে রামপুরহাট থানার আইসি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, শুধু হাসপাতালের সামনে নয়, বাসস্ট্যান্ড, ভাঁড়শালা মোড়ে রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকা টোটো সহ অন্যান্য যানবাহন আটক করা হয়েছে। পুজোর সময় সেভাবে নজর দেওয়া না গেলেও খুব শীঘ্রই অভিযানে নামা হবে।
এলাকার মানুষজন অবশ্য বলছেন, আর আশ্বাস নয়। কাজ করে দেখাক পুলিস।