উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে মধ্যম ফল আশা করা যায়। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। কর্মরতদের ... বিশদ
স্থানীয় ও রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের মতো বুধবারও রামপুরহাট থেকে বর্ধমানগামী একটি স্টাফ স্পেশাল ট্রেন সাঁইথিয়া, আহমদপুর হয়ে কোপাইয়ের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় আহমদপুরের কুসুমযাত্রা এলাকায় প্রদীপ সরকার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা রেললাইনে ফাটল দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে পেশায় চাষি বছর ৪০-এর প্রদীপবাবু অন্য বাসিন্দাদের রেললাইন ফাটলের খবর দেন। পরে কোনও উপায় না পেয়ে গামছা দেখিয়ে ট্রেনটিকে ফাটলের আগে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। ট্রেনের চালক বাসিন্দাদের গামছা নাড়ানো দেখে অবশ্য নির্দিষ্ট দূরত্বে এসে ট্রেনটিকে দাঁড় করান। তার ফলে অল্পের জন্য বড়-সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেনটি। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ায় ওই ট্রেনের চালক ও গার্ড নেমে এসে বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানান। তারপরই রেলের তরফে তড়িঘড়ি লাইন মেরামতির কাজও শুরু করা হয়।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মরশুমে তাপমাত্রার হেরফেরের জেরে রেললাইনে ফাটল বেড়ে যায়। তাই রেললাইনে নজরদারির জন্য পেট্রলিং ট্রেন চালানো হয়। এদিনও ওই ট্রেনে জরুরি কাজের জন্য রেলের কর্মীরা আসছিলেন। আহমদপুর স্টেশন পেরিয়ে সকাল ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ ট্রেনটি কুসুমযাত্রা এলাকায় থামে। পরে ১০টা ৪৮ মিনিট নাগাদ লাইন মেরামতির পর ট্রেনটি ফের ছেড়ে বর্ধমানের দিকে চলে যায়।
কুসুমযাত্রা গ্রামের নতুনপল্লির বাসিন্দা প্রদীপবাবু বলেন, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ রেললাইনের পাশের রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালিয়ে কাজে যাচ্ছিলাম। সেই সময় একটি মালগাড়ি পার হচ্ছিল। মালগাড়ি পেরনোর পরই ফাটল নজরে আসে। রেললাইনে ফাটলের জেরে মালগাড়ি যাওয়ার সময় বিকট শব্দ হচ্ছিল। আতঙ্কে পার্শ্ববর্তী রেলের ফটকের কর্মীকে খবর দিই। তারপর ফের ফাটলের কাছে এসে দেখি আহমদপুরের দিক থেকে একটি ট্রেন আসছে। কিছু, বুঝতে না পেরে গামছা নেড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। অবশেষে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন প্রদীপবাবুর সঙ্গে স্থানীয় কুসুমযাত্রা গ্রামের বাসিন্দা জীবন দাস, ধ্রুব দাস, মিহির পটুয়া সহ অন্যান্যরা এই কাজে হাত লাগান।
প্রদীপবাবু আরও বলেন, রেললাইনে ওই ফাটল দেখে ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এই ধরনের ঘটনা আগে কখনও দেখিনি। তাই সেভাবে কোনও অভিজ্ঞতাও নেই। বড়-সড় দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তা অত্যন্ত মর্মান্তিক হতে পারত।
ওই ট্রেনে রেলের কর্মীদের পাশাপাশি কিছু যাত্রীও বিশেষ অনুমতি নিয়ে যাতায়াত করছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক যাত্রী সজল চন্দ্র বলেন, এদিন সাঁইথিয়া থেকে বর্ধমানে যাচ্ছিলাম। কুসুমযাত্রা গ্রামের কাছে রেললাইনে ফাটল দেখতে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা গামছা নেড়ে ট্রেনটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। এর ফলে আমরা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছি।
রেলের এক আধিকারিক বলেন, রেললাইন সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দারা সচেতন হচ্ছেন। তার ফলে তাঁরা এদিন নিজেদের উদ্যোগে ফাটল দেখে ট্রেন দাঁড় করিয়েছেন। তাঁদের তৎপরতা সাধুবাদ যোগ্য।