কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
জানা গিয়েছে, গত জুন মাসে পেটে যন্ত্রণা নিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন রামপুরহাটের কালীসাঁড়া এলাকার প্রসেনজিৎ দাস(২৬)। সেখানে ডাঃ অভিষেক ঘোষের অধীনে চারদিন চিকিৎসা চলার পর তাঁর গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়ে। অভিযোগ, ওই চিকিৎসক পরিবারকে বলেন, নার্সিংহোমে ভর্তি করে অপারেশন করলে কিছুদিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে যাবে।
পেশায় দিনমজুর মৃতের বাবা জটাই দাস বলেন, ওই চিকিৎসকে ভরসা করে গত ৮ জুন ছেলেকে নার্সিংহোমে ভর্তি করি। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার সময় মাইক্রো সার্জারি করা হয়। কিন্তু, পেট থেকে বদরক্ত বেরনোর পাইপ লাইন থেকে প্রচুর পুঁজ বেরতে থাকে এবং পেট ফুলতে শুরু করে। বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে তিনি বিনা খরচে ২৩ জুন রাতে ফের অপারেশন করেন। কিন্তু, এরপরও ছেলে সুস্থ হয়নি। পরে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ নিজেদের গাড়ি দিয়ে তাদের খরচেই কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, পিত্তনালিতে ফুটো হয়ে গিয়েছে। এরপর আমরা ছেলেকে ফিরিয়ে এনে ফের নার্সিংহোমে রাখি। পরে গত ১৬ জুলাই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রোগীকে নিজেদের গাড়িতে চাপিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এতদিন সেখানে চিকিৎসা চলার পর বুধবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ছেলের মৃত্যু হয়। তাঁর দাবি, বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে ক্যান্সারে মারা গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর আরও দাবি, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের ভুল চিকিৎসার কারণেই পিত্তনালিতে ফুটো হয়ে ক্যান্সার হয়ে যাওয়ায় ছেলের মৃত্যু হল।
এরপরই মৃতের পরিজনরা এদিন সকালে বর্ধমান থেকে মৃতদেহ নিয়ে এসে নার্সিংহোমের সামনে হাজির হন। নার্সিংহোম ঢোকার প্রধান গেটের সামনে মৃতদেহ রেখে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিক্ষোভ চলাকালীন মৃতের বাবা দাবি করেন, দুই ছোট নাতি, নাতনি রয়েছে। তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সেই দাবি মানতে চায়নি। ফলে, বিক্ষোভ আরও বাড়ে। তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্যান্য রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। খবর পেয়ে পুলিস এসে মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য করে। পরে উত্তেজিত পরিবারের সদস্যরা সিএমওএইচের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
নার্সিংহোমের মালিক তথা সিউড়ির বিধায়ক ডাঃ অশোক চট্টোপাধ্যায় গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, অপারেশনে কোনও ভুল হয়নি। তাছাড়া যদি কোনও অভিযোগ থাকে তা জানানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। এভাবে গেটের সামনে মৃতদেহ রেখে চাপ সৃষ্টির কৌশলের কোনও মানে হয় না। কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না স্বাস্থ্যদপ্তর তা তদন্ত করে দেখুক।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে এই নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালায় মৃতার পরিজনরা। একের পর এক গাফিলতির অভিযোগ উঠতে থাকায় এই নার্সিংহোমের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকে।