বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গত ১৬ অক্টোবর শুক্রবার থেকে গোটা দেশে ১৯৬ জোড়া উৎসব স্পেশাল ট্রেন চালু হয়। তারমধ্যে হাওড়া-দীঘা স্পেশাল এসি সুপার ট্রেন রয়েছে। অনেকেই ভেবেছিলেন, পুজোর মুখে দীঘা স্পেশাল ট্রেন চালু হওয়ায় রেলপথে প্রচুর পর্যটক দীঘায় যাবেন। কিন্তু, সেই অনুমান একেবারেই মেলেনি। প্রথম দিন মাত্র পাঁচজন যাত্রী নিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছয় স্পেশাল ট্রেন। তারপরও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। ২০অক্টোবর মাত্র ৬০জন যাত্রী ওই ট্রেনে চড়ে দীঘায় গিয়েছেন। উৎসব স্পেশাল ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা এত কম হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে অনেকেই বলছেন, অত্যধিক ভাড়ার কারণেই ওই ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা কম। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রেলকে এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হতো।
হাওড়া থেকে দীঘা যাওয়ার জন্য সাধারণ ট্রেনে ভাড়া ৬৫ টাকা। তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসে ভাড়া ৯০ টাকা। আর এসি সুপারের ন্যূনতম ভাড়া ৪৮৫ টাকা। লকডাউনের কারণে সাধারণ মানুষজনের রোজগার ধাক্কা খেয়েছে। বিশেষ করে বেসরকারি ক্ষেত্রের কর্মীদের অনেকেরই অবস্থা বেশ খারাপ। পুজোর মরশুমে দীঘায় প্রতি বছর প্রায় ১০০ শতাংশ হোটেল, লজ বুকিং হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, বাড়িতেও পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করে অনেকে আয়ের মুখ দেখেন। কিন্তু, এবার এখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। পুজো মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় দীঘায় ভিড়ের সম্ভবনা ছিল। কিন্তু সেই সম্ভবনাও এখন আর দেখছেন না হোটেল মালিকদের একাংশ।
পর্যটকদের সুবিধার জন্য দীঘাগামী স্পেশাল ট্রেন চালু করেছে রেলমন্ত্রক। কিন্তু, সেটি এসি সুপার হওয়ায় মোটা ভাড়ার জন্য অনেকের ইচ্ছে থাকলেও চড়তে পারছেন না। বহু মানুষ আবার আতঙ্কে এখনই বেড়াতে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না।
লবণ সত্যাগ্রহ হল্ট স্টেশনের টিকিট এজেন্ট ভরত দাস বলেন, উৎসব স্পেশাল হিসেবে অনায়াসে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস চালানো যেত। সাধারণ মানুষজন ওই ট্রেনে দিব্যি দীঘায় যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু, প্রায় ৫০০ টাকার টিকিট কেটে এসি সুপারে যাতায়াত করার মতো আর্থিক ক্ষমতা অনেকেরই নেই। এই দিকটা রেলের ভেবে দেখা দরকার ছিল।
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, এই সময় মোটা টাকা খসিয়ে এসি ট্রেনে যাওয়া-আসা করার মতো অবস্থায় অনেকেই নেই। তাই দীঘা-হাওড়া উৎসব স্পেশালে যাত্রী সংখ্যা একেবারে কম।
গত ২৩ মার্চ থেকে করোনার জেরে ট্রেন চলাচল স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর প্রায় সাত মাস হতে চলল। গত জুলাই থেকে সৈকত সুন্দরী দীঘায় পর্যটকদের আসা-যাওয়া শুরু হয়েছে। পর্যটকদের একটা বড় অংশ প্রাইভেট গাড়ি ও বাইকে দীঘা যাচ্ছেন। এসবিএসটিসি বাসও চলছে। কিন্তু, দীঘায় যেতে অধিকাংশ পর্যটক রেলপথকেই বেছে নেন। সাধ্যের মধ্যে হাওড়া থেকে দীঘা যাতায়াত করা যায়। কিন্তু, স্পেশাল ট্রেন এসি সুপার হওয়ার কারণে সেটা অনেকের সাধ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। তমলুকের স্টেশন ম্যানেজার প্রশান্তকুমার রায় বলেন, এসি সুপার ট্রেনের পরিবর্তে অন্য কোনও ট্রেন থাকলে হয়তো আরও বেশি যাত্রী আসা-যাওয়া করতে পারতেন।