কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
২০০১ সালে অনাথ শিশুদের নিয়েই পূর্বস্থলীর বিদ্যানগর স্কুল মাঠে শুরু হয়েছিল শিশু মেলা কমিটির প্রথম দুর্গাপুজা। পুজোর মূল উদ্যোক্তা স্বপনবাবু। এবার এই পুজো ২০ বছরে পা দিল। মন্ত্রী অনাথ শিশুদের জন্য আশ্রমও বানিয়েছেন। বিদ্যানগরে শিশুদের দুর্গাপুজোয় বিশাল প্যান্ডেল না থাকলেও অনাবিল আনন্দময় পরিবেশে মেতে ওঠেন সকলে। জেলা তথা রাজ্যের বড় বড় সেলিব্রিটিরা অতিথি হিসেব উপস্থিত থাকলেও প্রতিবার আশ্রমের অনাথ ও দুঃস্থ শিশুদের মধ্যে একজন পুজোর উদ্বোধন করেন। বিদ্যানগরে শিশু মেলা কমিটির প্রথম দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করেছিল রাজু দত্ত নামে এক অনাথ শিশু। সেও ছিল পিতৃ মাতৃহীন। রাজু এখন সাবালক। মঙ্গলবার ছিল তারই বিয়ে। পুজোর প্রস্তুতির মধ্যেই নবদম্পতিকে নতুন বস্ত্র দিয়ে আশীর্বাদ করে আসেন স্বপনবাবু। বিপিনের এক মাসি বিপিনকে পূর্বস্থলীতে নিয়ে এসেছিলেন। অভাবের সংসারে শিশুটির দায়িত্ব নেওয়ার মতো তাঁর সামর্থ্য ছিল না। তিন বছর বয়সে বিপিনকে মন্ত্রীর অনাথ আশ্রমে দিয়ে যান। মন্ত্রী অনাথ শিশুদের নিয়েই পুজোর কমিটি গড়ে দিয়েছেন তিনি। পুজোর দিনগুলি তারা নিজেরা সব কাজকর্মও করে। মঙ্গলবার সকালে সমুদ্রগড় থেকে তাদের পুজো মণ্ডপে প্রতিমাও আসে। এদিন শিশুরা এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুজোর নিমন্ত্রণও করে আসে। দিন কয়েক আগেই ওই শিশুদের কালনা শহরের একটি বড় শপিং মলে নিয়ে গিয়েছিলেন কালনার পুর প্রশাসক দেবপ্রসাদ বাগ। সেখান থেকে তাদের পছন্দ মতো জামা, প্যান্ট বেছে নিতে বলেছিলেন। তাতে বেজায় খুশি হয়েছে শিশুরা।
এখানে ষষ্ঠীর দিন শিশুদের চুল কাটিয়ে স্নান করিয়ে নতুন জামা-প্যান্ট পরানো হয়। দশমী পর্যন্ত নানা পদের খাওয়া দাওয়া চলে। তাদের পাশে থেকে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেন স্বপনবাবুও। তবে এবার করোনার জন্য পুজোর অনেকে অনুষ্ঠানই বন্ধ থাকছে। সিনেমা, জাদু, রায়বেঁশে নৃত্য অনুষ্ঠান হচ্ছে না। এমনকী মণ্ডপ থেকে বস্ত্র বিতরণ করা বন্ধ রাখা হয়েছে। তার বদলে সোমবার থেকেই দুঃস্থদের বাড়ি বাড়ি নতুন বস্ত্র পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে, শিশুদের জন্য পুজোর চারদিন নানা পদের বাহারি খাবারের বন্দোবস্ত থাকছে। অষ্টমীর দিন পুজোমণ্ডপের পাশেই পরেশচন্দ্র গোস্বামী শিশু উদ্যানটির উদ্বোধন করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, এলাকার অনাথ শিশুদের কথা ভেবেই এই দুর্গাপুজোর আয়োজন করেছিলাম। করোনা আবহে এবছর কিছু অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও শিশুদের সমস্ত রকম আনন্দ ও খাবারের ব্যবস্থা থাকবে। অনাথ হলেও ওরা যেন বুঝতে পারে, ওদেরও নিজস্ব পুজো আছে। ওদের আনন্দ দেওয়াই এই পুজোর আসল উদ্দেশ্য।
কালনা সুলতানপুরে বিশ্রামাগারের উদ্বোধনে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ও জেলা সভাধিপতি শম্পা ধারা। - নিজস্ব চিত্র