বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
শুভমদের আদি বাড়ি খয়রাশোলের কৃষ্ণপুরে। তাঁর বাবা পরিমল রায় লটারি বিক্রি করেন। মা ছন্দাদেবী গৃহবধূ। ২০০১ সাল থেকে শুভম তাঁর বাবা, মা, দাদু ও ঠাকুমার সঙ্গে সিউড়ির সাজানোপল্লিতে থাকেন। শুভম বিকেটিপিপি প্রবীর সেনগুপ্ত স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণী থেকে পড়ছেন। সেখান থেকেই তিনি ২০১৮ সালে মাধ্যমিকে ৬৮০ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মেধা তালিকায় দশম স্থান অধিকার করেছিলেন। একইভাবে উচ্চ মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় না এলেও তিনি ৯৭ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন।
শুভম বলেন, স্কুলের জন্যই আমার এই সাফল্য এসেছে। স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। মাধ্যমিকের পর থেকেই ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছা হয়। সেইমতো আমি প্রস্তুতি শুরু করি। শুভম জানিয়েছেন, বাড়িতে বসে পড়াশোনা করে মেডিক্যালে চান্স পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু, আইআইটি বা অন্য গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় বসতে হলে উন্নতমানের কোচিং প্রয়োজন। যা বর্তমানে সিউড়িতে নেই। তাই শুভমের মাধ্যমিকের সাফল্যের কথা শুনে বিভিন্ন সংস্থা, ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। রাজ্য সরকারও তাঁকে ল্যাপটপ সহ সংবর্ধনা জানিয়েছে।
জানা গিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য তিনি স্কুলে শিক্ষকদের মাধ্যমেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। মেডিক্যালের জন্য কয়েকটি বিষয়ের প্রাইভেট টিচারের কাছে ব্যাচে গিয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন। লকডাউনের সময় বাড়িতে পড়াশোনা করে তাঁর অনেকটা লাভও হয়েছে বলে জানিয়েছেন। শুভম বেশিরভাগ সময় রাত জেতে পড়াশোনা করেছেন। তবে, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো, সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি বেশ কিছুটা সময় কাটিয়েছেন। তাঁর দাবি, মেডিক্যালের পরীক্ষায় অলনাইনে কিছু প্রশিক্ষণ কাজে লেগেছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষা হয়। শুভমের সিট পড়েছিল পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে। লকডাউনের জন্য তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষা দিতে যান। গত ১৬ অক্টোবর নিটের ফল প্রকাশ হয়। শুভম বলেন, ডাক্তারি মানে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করার সুযোগ। সমাজের জন্য কিছু করে দেখানোর উপায় রয়েছে। সম্মানের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের নিরাপত্তাও পাওয়া যায়। তাই ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছা মাধ্যমিকের পর থেকে তৈরি হয়। সেইমতো প্রস্তুতি নিয়েছি। এরকমই র্যাঙ্ক হবে বলে আশা করেছিলাম। র্যাঙ্ক হয়েছে তাতে সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া যাবে।
শুভমের বাবা বলেন, মাধ্যমিকের পর থেকে বহু মানুষ ছেলের পড়াশোনায় সাহায্য করেছেন। তার ফলে ছেলের পড়াশোনায় কোনও অসুবিধা হয়নি। এখন মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে। ইতিমধ্যে এক পুলিস আধিকারিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন। শুভমের মা বলেন, ছেলে প্রতিজ্ঞা নিয়ে পড়াশোনা করত। আমাদের কখনও কিছু বলতেই হতো না। ওর সাফল্যে আমরা গর্বিত।